মওলানা ফজ়লুর রহমান। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে শাসক কিংবা বিরোধী শিবির— উভয় পক্ষের প্রচারেই কখনও এসে পড়ছে পাকিস্তান প্রসঙ্গ। পড়শি দেশে কয়েক মাস আগে ভোট মিটে গেলেও সেখানে কিন্তু এখনও প্রাসঙ্গিক ভারত। সম্প্রতি নিজেদের দেশের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে ভারতের উদাহরণ টেনে আনলেন পাকিস্তানের আরও এক শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক। পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে সম্প্রতি সুদীর্ঘ ভাষণ দেন জমিয়তে উলেমা-ই-ফজ়ল (জেইউআই-এফ)-এর প্রধান মওলানা ফজ়লুর রহমান। কট্টরপন্থী বলেই পরিচিত এই নেতা পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফের সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের তুলনা করে দেখুন। আজ ওরা (ভারত) সুপার পাওয়ার (বড় শক্তি) হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। আর আমরা দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে ভিক্ষা করছি।”
দীর্ঘ দিন ধরেই অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। মনে করা হচ্ছে ফজ়লুর সেই দিকে ইঙ্গিত করেই পাক সরকারকে আক্রমণ করেছেন। সোমবার পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, চরম প্রতিদ্বন্দ্বী দল, ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব খোয়ানোর পর যাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ফজ়লুরও। ইমরান গদিচ্যুত হওয়ার পর শাহবাজ়ের নেতৃত্বে যে জোট সরকার তৈরি হয়, তার শরিক ছিল ফজ়লুরের দলও। যদিও পাকিস্তানের বর্তমান পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ় (পিএমএল-এন) জোট সরকারের শরিক হননি তিনি। অভিযোগ করেছেন যে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে।
সম্প্রতি জেলবন্দি ইমরানের দলকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি পাক প্রশাসন। ফজ়লুর এই প্রসঙ্গে পাক অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে বলেন, “পিটিআইয়ের সভা করার অধিকার রয়েছে।” পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছে ইমরানের দলও। এই প্রসঙ্গে ফজ়লুর বলেন, “২০১৮-র নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না কেন?” আরও এক ধাপ এগিয়ে কট্টরপন্থী এই নেতা পাকিস্তানের শাসকজোটের উদ্দেশে বলেন, “ক্ষমতা ছেড়ে দিন। বিরোধী বেঞ্চে এসে বসুন। যদি পিটিআই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়, তবে তাদের সরকার গড়তে দিন। ফজ়লুরের এই কাণ্ডকারখানা দেখে সে দেশের অনেকেরই অনুমান, সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা আদায় করতে চাইছেন তিনি।