Immigrants

জুনেই আমেরিকায় থাকার অধিকার হারাতে পারেন ২ লক্ষ বিদেশি কর্মী

দক্ষ কর্মীর অভাব পূরণ করতে এইচ-ওয়ান-বি ভিসা দিয়ে অন্য দেশের নাগরিকদের চাকরি দিয়ে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৫:০৯
Share:

আমেরিকায় থাকার অধিকার হারাতে চলেছেন ভিন দেশ থেকে যাওয়া ২ লক্ষ মানুষ। —প্রতীকী চিত্র।

নোভেল করোনার প্রকোপে রোজগারে টান পড়েছে আগেই। এ বার আমেরিকায় থাকা ও কাজ করার মেয়াদও ফুরোতে পারে প্রায় ২ লক্ষ বিদেশি কর্মীর। আসন্ন জুন মাসই তাঁদের এইচ-ওয়ান-বি ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। তা পুনর্নবীকরণে মার্কিন সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাই তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিজ নিজ দেশে তাঁদের ফিরে যেতে হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তাঁদের মধ্যে।

Advertisement

দক্ষ কর্মীর অভাব পূরণ করতে এইচ-ওয়ান-বি ভিসা দিয়ে অন্য দেশের নাগরিকদের চাকরি দিয়ে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্ত সেই ভিসার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে, যা ফুরিয়ে গেলে ভিসা পুনর্নবীকরণ করাতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা না করালে, যাঁর নামে ওই ভিসা তিনি সে দেশে থাকার অধিকার হারান। তল্পিতল্পা গুটিয়ে নজের দেশে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। শুধু তাই নয়, তার পরে তিন থেকে দশ বছরের মধ্যে নতুন করে মার্কিন এইচ-ওয়ান-বি ভিসা পাবেন না তিনি।

করোনা পরবর্তী কর্মসঙ্কট সামাল দিতে ইতিমধ্যেই আগামী দু’মাসের জন্য মার্কিন মুলুকে অভিবাসী প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার, যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে কর্মক্ষেত্রে ভিন্ দেশ থেকে আসা মানুষদের চেয়ে মার্কিন মুলুকে জন্মগ্রহণকারীদের প্রাধান্য দেওয়া যায়। তেমন হলে অন্য দেশ থেকে আসা নাগরকিদের ফিরে যেতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির অভিবাসী নীতি বিশেষজ্ঞ জেরেমি নিউফেল্ড। শুধু তাই নয়, গ্রিনকার্ডের আশায় যে হাজার হাজার মানুষ বসে রয়েছেন, তাঁদেরও খালি হাতে ফিরতে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশে এক দিনে মৃত্যুতে রেকর্ড, নতুন আক্রান্ত প্রায় ১৯০০​

প্রতিবছর মার্কিন সরকার যত জনকে এইচ-ওয়ান-বি ভিসা দেয়, তার মধ্যে সিংহভাগই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মরত। তাই অ্যাপল, অ্যামাজন, ফেসবুক, গুগল এবং মাইক্রোসফ্টের হয়ে ইতিমধ্যেই মার্কিন স্টেট অ্যান্ড হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি দফতরকে চিঠি দিয়েছে টেকনেট নামের একটি লবি সংস্থা। তাতে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেো কমপক্ষে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিবাসীদের ওই সব সংস্থায় কাজ চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে মার্কিন সরকার এখনও পর্যন্ত সে নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি।

অন্য দিকে, নোভেল করোনার জেরে এই মুহূর্তে ভারত-সহ একাধিক দেশের সীমান্ত বন্ধ। পুরোপুরি বন্ধ বিমান পরিষেবাও। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন মুলুক থেকে যে দেশে ফিরবেন, সেই উপায়ও নেই সে দেশে কর্মরত অভিবাসীদের। তাতে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বহু মানুষ, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন, মানসী বাসবরা। ৩১ বছরের মানসী দু’বছর হল নিউ জার্সিতে দাঁতের ডাক্তার হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করেছেন। তাঁর স্বামী নন্দনও পেশায় দাঁতের চিকিৎসক।

আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু সিআরপিএফ জওয়ানের, পুরো ব্যাটালিয়নকে পাঠানো হল কোয়রান্টিনে​

এইচ-ওয়ান-বি ভিসার অধীনে বিনা রোজগারে আমেরিকায় একটানা ৬০ দিনের বেশি থাকা যায় না। কিন্তু করোনা হানা দেওয়ার পর মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকেই রোজগার বন্ধ অনেক কর্মীর। জুনে কারও কারও ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু দেশে ফেরার কথা ভাবতেও পারছেন না তাঁরা। করোনার জেরে ভারতের সীমান্ত বন্ধ। তার উপর মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অনেক ঋণও নিতে হয়েছিল তাঁদের, যা আজও মাথার উপর ঝুলছে। কোনও ভাবে দেশে ফিরে গেলেও সেখানে যে টাকা রোজগার করবেন, তাতে ওই বিপুল ঋণ শোধ করবেন কি করে, সেই চিন্তাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement