ক্লিভেজ প্রদর্শন নিয়ে আপত্তি প্যারিসের মিউজিয়ামে। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
ক্লিভেজ প্রদর্শন নিয়ে আপত্তি। আর সেটাও আবার প্যারিস শহরে। ছবির দেশ ফ্রান্সের রাজধানীতে ছবির প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে এক অচেনা অস্বস্তির মুখোমুখি হতে হল জিন হুয়েত নামে এক তরুণীকে। আর্ট মিউজিয়ামের গেটেই আটকে দেওয়া হল। কারণ, তাঁর পোশাকে আপত্তি নিরাপত্তারক্ষীদের। না, ওই মিউজিয়ামে এমন কোনও পোশাকবিধি নেই। তবুও আপত্তি। শেষে ম্যানেজারও আপত্তি তুললেন। অগত্যা প্রবেশের অনুমতি পেতে ক্লিভেজ ঢাকতেই হল ২২ বছরের জিনকে। সেই অভিজ্ঞতার কথা পরে নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তিনি।
সঙ্গী ক্যানেভালকে নিয়ে সেদিন একটু অন্য রকম করে কাটাতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া জিন। একটা কাফেতে লাঞ্চ সেরে ওঁরা যান ইউরোপের অন্যতম বড় এবং বিখ্যাত শিল্প সংগ্রহশালা মুসে দোর্সে আর্ট মিউজিয়ামে। প্রিয় শিল্পী জেমস টিসটের প্রদর্শনী চলছিল। এই ফরাসি চিত্রশিল্পী মহিলাদের জীবন নিয়ে কাজ করার জন্যই খ্যাত। সেই প্রদর্শনী দেখার খুবই আগ্রহ ছিল জিনের। কিন্তু টিকিট কাটার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। কারণ, জিনের পোশাক।
প্রথমে একটু অবাকই হয়ে যান তিনি। প্রবেশে বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চান। কিন্তু সবাই চুপ। তবে সকলের চোখ দেখে জেনি বুঝে যান আপত্তিটা ঠিক কোথায়। কারণ, গেটে একে একে জড়ো হওয়া নিরাপত্তারক্ষী থেকে মিউজিয়ামের ম্যানেজার, সকলেরই নজর তাঁর ক্লিভেজের দিকে। অস্বস্তি কাটিয়ে জিন নিজেই জানতে চান, আমার স্তন নিয়েই কি আপনাদের সমস্যা?
আরও পড়ুন: প্রেমিকা পদে কর্মখালি, পাত্র চিকিৎসক, বেতন পারফরম্যান্স দেখে
না। এর পরেও কেউ সরাসরি কোনও উত্তর দেননি। একই সঙ্গে তাঁর বুক থেকে কারও চোখও সরেনি। চোখের চাউনি দিয়েই যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয় আপত্তি। মিউজিয়ামের পোশাকবিধি দেখতে চাইলেও কোনও উত্তর মেলেনি কর্তৃপক্ষের তরফে। অবশেষে নির্দেশ আসে, জ্যাকেট পরে সেটার জিপ গলা পর্যন্ত টেনে নিলেই মিলবে মিউজিয়ামে ঢোকার ছাড়পত্র। নয় তো না। প্রিয় শিল্পীর প্রদর্শনী দেখার আগ্রহে বাধ্য মেয়ের মতো ক্লিভেজ ঢেকে নেন জেনি। কিন্তু প্রদর্শনী দেখায় আর মন দিতে পারেননি। সারাক্ষণ এক রাশ অস্বস্তি আর প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরেছে। বাড়ি ফিরে সেই সব অস্বস্তি উগরে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন: ষোড়শী কন্যা যেন সব্যসাচী, একসঙ্গে দু’হাতে লেখে, তাও আবার উল্টো মুখে
মহিলাদের প্রতি এই আচরণ কেন? প্রশ্ন তুলে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি খোলা চিঠি লেখেন জিন। আর তা ভাইরাল হয়ে যায় গোটা ফ্রান্সেই। তাঁকে কেন এমন অসম্মান করা হল তা নিয়ে জেনির সমর্থনে সরব হন বহু মানুষ। আর তার জেরে চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয় মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ।
দেখুন জিনের সেই পোস্ট: