ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
দু’দিনের বিরতির পর সোমবার শুরু হল পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন। আর শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ। কিন্তু সেই প্রস্তাব ঘিরে বিতর্কের আগেই আগামী বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত সভা মুলতুবি ঘোষণা করলেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ সোমবার দাবি করেছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর বার্তা স্পষ্ট হওয়ায় ভোটাভুটির আগেই ইস্তফা দিতে পারেন ইমরান।
পরবর্তী জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর নেতা শাহবাজ শরিফকে দেখা যেতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কয়েকটি খবরে। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার অধিবেশ শুরুর পরে বিরোধীদের তরফে অনাস্থা পেশের আগেই সোমবার পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবির ঘোষণা করেছিলেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার আসাদ কাইজার।
এরই মধ্যে সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লিগ (কায়েদ)-এর তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইমরান সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দলের ৫ জন সদস্য রয়েছেন। ৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ‘জাদু সংখ্যা’ ১৭২। ইমরানের নিজের দল পিটিআই-এর সদস্য ১৫৫ জন। বুধবার ইমরান সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর ৭ এবং বালুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি)-র ৫ সদস্য রয়েছেন। রবিবার সমর্থন প্রত্যাহারকারী জামহুরি ওয়াতন পার্টির রয়েছেন এক সদস্য।
অন্য দিকে, বিরোধী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর ৮৪ এবং পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র ৫৬ জন সদস্য রয়েছেন। সব মিলিয়ে সম্মিলিত বিরোধী জোটের সদস্য ১৬০-এরও বেশি। তা ছাড়া, ইমরানের দলের ১৫৫ জনের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পাক সেনার তরফেও ইমরানকে ইস্তফার ‘বার্তা’ পাঠানো হয়েছে বলে সে দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার ইসলামাবাদে পিটিআই-এর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ইমরান অভিযোগ করেন, বিদেশি অর্থে পাকিস্তানে সরকার বদলের ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ তাঁর সরকার পাকিস্তানকে স্বাধীন বিদেশনীতির পথে নিয়ে যাচ্ছে। যা কিছু প্রভাবশালী ‘বিদেশি’ শক্তির পছন্দ হচ্ছে না।