নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিকে ‘জিবলি’ কার্টুনের কায়দায় বানানো হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
মুহুর্মুহু আবদার আসছে। একমুহূর্ত বিশ্রাম নেওয়ার জো নেই! কেউ গাছের পিছনে দাঁড়িয়ে তোলা ছবি দিচ্ছেন, তো কেউ পুকুরপাড়ে বা পাহাড়ের কিনারায় দাঁড়িয়ে তোলা শখের নিজস্বী পাঠাচ্ছেন। ‘জিবলি’র কায়দায় কার্টুন ছবি বানিয়ে দিতে হবে! শুধু নিজের ছবিই নয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প, লিয়োলেন মেসি, ইলন মাস্ক, নরেন্দ্র মোদী বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউই বাদ যাচ্ছেন না। তাঁদের ছবিও ‘জিবলি’ কার্টুনের মতো চাই। নেটাগরিকদের এত আবদারের চোটে ঘুম উড়ে গিয়েছে ‘ওপেনএআই’ সংস্থার কর্মীদের। উৎসাহীদের আবদার মেটাতে নাওয়াখাওয়া ভুলে সারা দিন কাজ করে যেতে হচ্ছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে সংস্থার কর্ণধার স্যাম অল্টম্যানের কাতর আবেদন, ‘‘ওঁদের (সংস্থার কর্মীদের) ঘুমোতে দিন।’’
ওসাকার এক গবেষণাগারে তিন বছরের পরিশ্রমে ফুটবলের দেড়গুণ আয়তনের গোলকাকৃতি এক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার ‘কম্পু’ তৈরি করেছিলেন প্রফেসর শঙ্কু-সহ বিশ্ববিখ্যাত সাত বিজ্ঞানী। ১৯৭৮ সালে সত্যজিৎ রায়ের লেখনীতে সেই প্রাক্-আন্তর্জালের দুনিয়ায়, গুগলহীন পৃথিবীতে, ‘কম্পু’ ছিল বিশ্বকোষের প্রতিস্থাপক। কিংবা আরও কিছু বেশি। সে পঞ্চাশ কোটি প্রশ্নের জবাব দিতে পারত, তার ছিল বিবেচনার ক্ষমতা, খেলতে পারত ব্রিজ কিংবা দাবা, বিচার করতে পারত সঙ্গীতের সুরের। কিন্তু ঘটনাচক্রে এক সময় কম্পুর মধ্যে সঞ্চারিত হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ। সাম্প্রতিক কালে তেমনই এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘চ্যাটজিপিটি’ গোটা বিশ্ব জুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। সেই যন্ত্রেরই নবতম দক্ষতা যে কোনও ছবিকে ‘জিবলি’র কায়দায় কার্টুন বানানো।
তা যে এমন আলোড়ন ফেলবে, স্যামও সম্ভবত কল্পনা করেননি। এক্স হ্যান্ডলে কর্ণধার লেখেন, ‘‘আপনারা দয়া করে ছবি বানানো বন্ধ করবেন? এ বার পাগলামি হচ্ছে! আমার কর্মীদের ঘুম দরকার।’’
পরিস্থিতি এমন দিকে গড়িয়েছে যে, ‘জিবলি’র মতো কার্টুন ছবি বানাতে গেলে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থা। অর্থাৎ, যাঁরা টাকা খরচ করে ‘চ্যাটজিপিটি’ প্রিমিয়াম ভার্সন কিনবেন, তাঁরাই ‘জিবলি’র মতো ছবি বানাতে পারবেন যত ইচ্ছে। বাকিরা দিনে তিনটের বেশি নয়।
তবে গোটা বিষয়টিতে স্যাম আপ্লুত। তাঁর কথায়, ‘‘জিবলি ছবির চাহিদা সামাল দিতে গিয়ে চ্যাটজিপিটির গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিটের এখন-তখন দশা। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করা হয়েছিল, তা সফল হওয়ায় আমরা খুশি।’’