বাংলাদেশে উত্তাল পরিস্থিতির দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স।
মীরপুরের বছর সাতাশের হাসিব ইকবাল একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনও যোগ ছিল না। সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’ সূত্রে খবর, হিংসাত্মক আন্দোলনের মাঝে পড়ে গত শুক্রবার মৃত্যু হয়েছে তাঁরও।
হাসিবের বিয়ের জন্য পাত্রীর খোঁজ চলছিল। শুক্রবারও তাঁর বাবা আব্দুল রাজ্জাক গিয়েছিলেন ছেলের জন্য পাত্রী দেখতে। বাড়ি ফিরে জানতে পারেন, ছেলে আর বেঁচে নেই। বিবিসি বাংলাকে মৃত যুবকের বাবা জানিয়েছেন, সে দিন শুক্রবারের নমাজে ছেলের সঙ্গেই যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর দেরি হওয়ায় ছেলে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল নমাজের জন্য। পরে সেখানে গিয়ে তাঁদের আর দেখা হয়নি। নমাজ থেকে ফিরে ছেলের জন্য পাত্রী দেখতে যাওয়ার কথা ছিল আব্দুলের। ফলে নমাজ সেরে তিনিও আর ছেলের জন্য অপেক্ষা করেননি। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন পাত্রী দেখতে।
বিবিসি বাংলা সূত্রে খবর, সে দিন নমাজ শেষের পর আব্দুল বাড়ি ফিরে পাত্রী দেখতে বেরিয়ে গেলেও, ছেলে আর বাড়ি ফেরেনি। প্রায় তিন ঘণ্টা এ ভাবে অপেক্ষা করার পর দুশ্চিন্তা গ্রাস করতে থাকে পরিবারের লোকজনদের। আব্দুল যখন বাড়ি ফেরেন, তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। কিন্তু তখনও হাসিব বাড়ি ফেরেননি। বাইরে তখন আন্দোলনের জন্য তপ্ত পরিস্থিতি। আত্মীয়-পরিজন থেকে শুরু করে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকেন তাঁরা। হঠাৎ সন্ধের দিকে বাড়িতে ফোন আসে। হাসিবের বাবাই ফোন ধরেন। সেই ফোনেই তিনি জানতে পারেন, ছেলে আর বেঁচে নেই।
বিবিসি বাংলা সূত্রে খবর, সম্ভবত দুপুরেই মৃত্যু হয়েছিল হাসিবের। তখন পুলিশ তাঁর দেহ পাঠিয়ে দিয়েছিল ‘আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে’। এটি হল বেওয়ারিশ লাশ সমাধিস্থ করার একটি দাতব্য সংগঠন। হাসিবের মৃত্যুর পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তাঁর দেহ শনাক্ত করতে না পারায় সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছিল। পরে সেখানের আব্দুলদের এলাকার কিছু লোক হাসিবের দেহ দেখে চিনতে পারেন। তখনই তাঁরা ফোন করেন আব্দুলদের বাড়িতে এবং গোটা বিষয়টি জানান।