বুর্জ খালিফায় মালিকানাধীন ২২টি ফ্ল্যাট। ইনসেটে, জর্জ ভি নেরেপরমবিল।
এ এক আশ্চর্য ইচ্ছেপূরণের কাহিনি। কেরলের এসি মিস্ত্রি আজ দুবাইয়ের বিলাসবহুল বহুতল বুর্জ খালিফায় ২২টি ফ্ল্যাটের মালিক। সবই নাকি সম্ভব হয়েছে একটা স্বপ্নের পিছনে ছুটে। অন্তত সে রকমটাই দাবি জর্জ ভি নেরেপরমবিলের। কেরলের গ্রামের সেই ছোট্ট ছেলেটি আজ দুবাইয়ের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী। নিজের চেষ্টাতেই গড়ে তুলেছেন এক বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। রুজিরুটির টানে যিনি মাত্র ১১ বছর বয়সেই পথে নেমেছিলেন। তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না জর্জ। মনের মতো সওদা পেলে দুবাই তথা বিশ্বের উচ্চতম বিল্ডিং বুর্জ খালিফায় আরও কয়েকটি ফ্ল্যাট কিনতে চান তিনি। নিজের ইচ্ছেপূরণের কাহিনি শোনাতে গিয়ে বলেছেন, “আমি কখনও স্বপ্ন দেখা থামাইনি।”
বুর্জ খালিফায় সবচেয়ে বেশি ফ্ল্যাটের ব্যক্তিগত মালিকানা এখন ৬২ বছরের জর্জের কাছে রয়েছে। কিন্তু, কী করে সম্ভব হল এই আপাতঅসম্ভব উত্তরণ? জর্জ ফিরে যান বহু বছর আগের দিনগুলোতে। “বুর্জ খালিফার সামনে দাঁড়য়ে এক আত্মীয় ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, কোনও দিন এখানে ঢোকার মতো সামর্থ্যই হবে না আমার।” সে দিন থেকেই মনে জেদ চেপে যায় তাঁর। যে করেই হোক ওই বহুতলে ফ্ল্যাটের মালিকানা পেতে হবে। ২০১০-এ ওই বহুতলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়ার বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তা ভাড়ায় নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। সেই শুরু। এর পর কেটে গিয়েছে ছ’বছর। বুর্জ খালিফার ২২টি ফ্ল্যাটের মধ্যে পাঁচটি ভাড়া দিয়েছেন। বাকি ফ্ল্যাটগুলোও ভাড়া দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
তবে শুরুতেই খুব একটা সহজ ছিল না পথচলা। কেরলে নিজের শহরে তুলোর বীজ কুড়োত ১১ বছরের ছোট্ট জর্জ। ব্যবসায়ীরা তুলোর বীজ ফেলে দিতেন। কিন্তু, নোংরা ঘেঁটে তা সংগ্রহ করে রাখত জর্জ। কারণটাও জানিয়েছেন তিনি। “অনেকেই জানতেন না, তুলোর বীজ থেকে খুব ভাল আঁঠা তৈরি করা যায়।” তা বিক্রি করে ৯০ শতাংশ মুনাফাও করত সে। এই ভাবেই তেঁতুলের খোল বিক্রি করেও সেই বয়সে বেশ লাভের মুখ দেখেছিল সে। এই বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়েই বোধহয় দুবাইয়ে নিজের ব্যবসা বাড়িয়েছেন তিনি। শারজায় প্রথম পা রেখেই বুঝেছিলেন, মরুভূমির দেশে এসি মেশিনের ব্যবসা জমবে ভাল। সেই শুরু। এর পর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি জর্জকে।
আরও পড়ুন