ফাইল চিত্র।
মালয়েশিয়া বা তুরস্কের মতো দেশগুলি গত কয়েক মাস ধারাবাহিক ভাবে মোদী সরকারের সমালোচনা করে এসেছে। তবে ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন)-তে কিছুটা হলেও নয়াদিল্লির পাশে থেকেছে আরব দেশগুলি। সেই পাশে থাকার মূল কারণ ছিল অবশ্যই বাণিজ্যিক। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি নিয়ে উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে গোটা মুসলিম দুনিয়ারই। অভিযোগ উঠছে, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বিষয়টি সরকারের কাছে আগামী দিনগুলিতে বড় চাপের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছ থেকেও নেতিবাচক বার্তা পাচ্ছে ভারত।
সম্প্রতি দিল্লির এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, কয়েক বছরে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রসারিত হয়েছে। ভারতের কাছে তা সম্পদস্বরূপ। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘প্রসারিত সম্পর্ক’ যে অনেকটাই ধাক্কা খেতে চলেছে তা একের পর এক ঘটনায় স্পষ্ট। ঘরোয়া রাজনীতি ও কেন্দ্রীয় নীতি প্রণয়নের জন্য বিদেশনীতির প্রশ্নে কতটা সমঝোতা করা হবে, এখন সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ সাউথ ব্লকের সামনে।
সরকারের কাছে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, যে সুরে ও ভাষায় ৫৭টি মুসলমান রাষ্ট্রের সংগঠন ওআইসি সমালোচনা করতে শুরু করেছে, তার প্রভাব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্পর্কে পড়তে পারে। যার ফায়দা নিতে পারে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস পাচারের জন্য বারবার কাঠগড়ায় দাঁড়ানো প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দু’দিন আগেই ওআইসি-র পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় কোণঠাসা হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়া এবং পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে উদ্বিগ্ন ওআইসি। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে যে সনদ রয়েছে, তার থেকে যদি ভারতে অন্য কিছু হয়, তা হলে তা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে ওআইসি-র পক্ষ থেকে সরাসরি অনুরোধ করা হচ্ছে।
অথচ এই ওআইসি-তে গত বছরেই প্রথম ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে ডাক পায় ভারত। প্রতিবাদে সম্মেলন বয়কট করে পাকিস্তান। তখন বিষয়টিকে কূটনৈতিক জয় হিসেবে তুলে ধরতে পিছপা হয়নি নয়াদিল্লি।