চিনের প্রায় ১১টি শহরে লকডাউন চলছে। ছবি রয়টার্স।
ফিরেছে টেপ দিয়ে ঘেরা কন্টেনমেন্ট জ়োন। আগেভাগে প্রয়োজনীয় জিনিস মজুতের জন্য বাজারে বাজারে উপচে পড়ছে আতঙ্কিত জনতার ভিড়। গোড়া থেকেই ‘জ়িরো কোভিড’ নীতি নিয়ে চলা চিনের বেশির ভাগ শহরে এখন এটাই পরিচিত চিত্র। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। সংক্রমণ ফের মাথা চাড়া দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সে দেশের বিভিন্ন এলাকাতেও। তাদের এক বিশেষ সমীক্ষায় এমনটাই উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে আমেরিকার সেন্টার্স ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (সিডিসি)।
চিনে ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের জেরে প্রায় ১১টি শহরে লকডাউন চলছে। যা অন্যান্য অঞ্চলে চালু করা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবারই এক লাফে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫২৮০-তে পৌঁছে গিয়েছে সে দেশে। যা গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ!
এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফের জীবন এবং জীবিকার ছন্দে ফেরার চেষ্টায় হঠাৎ লাগাম পরাতে বাধ্য হয়েছেন প্রশাসনিক এবং স্বাস্থ্য কর্তারা। বিধি শিথিলের পন্থা ঝেড়ে ফেলে ফের বিশাল সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা এবং অন্যান্য কড়াকড়ি ফেরানোর পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন।
যেমন গত কয়েক মাসে ফের পর্যটকদের ভিড়ে গমগমে হয়ে ওঠা সাংহাই-এর বিখ্যাত ‘ওয়াটারফ্রন্ট’ এ সপ্তাহে ছিল একেবারে শুনশান। খুব দরকার না-হলে মানুষের রাস্তায় বেরোনো মানা। ফের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ ফেরানো হয়েছে কর্মীদের। আবার অনলাইনেই পঠনপাঠন শুরু হয়েছে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও। কিছু কিছু প্রদেশে রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়াদাওয়ার উপরেও জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
উত্তর-পূর্বের জিলিন প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে যা প্রায় তিন হাজার ছাড়িয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। দক্ষিণের শেনজ়েন শহরের পরিস্থিতিও ভাল নয়। যার জেরে ইতিমধ্যেই কড়া লকডাউন চালু হয়েছে সেখানেও। বলাই বাহুল্য, এর প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারেও। হংকং মার্কেটে মঙ্গলবার সূচক প্রায় তিন শতাংশের বেশি পড়ে গিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
সংক্রমণের নিরিখে ঘোরালো হচ্ছে আমেরিকার পরিস্থিতিও। সিডিসি-র তরফে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, সংক্রমণ সংখ্যায় এখনই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না দেখা গেলেও আগামী দিনে বিপদ বাড়তে চলেছে বলেই আশঙ্কা। কারণ গত ১ থেকে ১০ মার্চের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য জলের নমুনা পরীক্ষা করে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। ওই জলে পাওয়া গিয়েছে কোভিডের নমুনা। যদিও সেই সূত্রে আক্রান্তের সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর থেকে অন্তত এটা পরিষ্কার যে আক্রান্ত আগের চেয়ে বেড়েছে।