ছবি: সংগৃহীত।
ইউরোপ, ব্রিটেন, আমেরিকা, চিন ও হংকং... এই পাঁচটি দেশে ভয় জাগিয়ে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে কোভিড। বিশেষ করে, আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম অংশে করোনাভাইরাসের নয়া প্রজাতি ওমিক্রনের বিএ.২ ভেরিয়েন্টের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি এই নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সেই অঞ্চলের প্রশাসন। সঙ্গে ইউএস কংগ্রেসের কাছে করোনা সংক্রান্ত নতুন তহবিলেরও আবেদন করেছেন তাঁরা। করোনা সংক্রমণ আবার হাতের বাইরে চলে গেলে যাতে সহজে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় সেই জন্যই এই উদ্যোগ।
বর্তমানে আমেরিকায় দৈনিক গড়ে ২৮ হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে। কিন্তু কোভিডে মৃতের সংখ্যা এখন দৈনিক ৯০০। এ ভাবে সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকলে, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এক মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ছোঁবে দশ লক্ষ। সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (সিডিসি)-এর ডিরেক্টর রোশেল ওয়ালেনস্কি জানিয়েছেন, নিউ ইয়র্ক ও নিউ ইংল্যান্ড প্রদেশে ওমিক্রনের এই নতুন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। বর্তমানে দেশে কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে ৩৫ শতাংশই আক্রান্ত হয়েছেন এই নতুন ভেরিয়েন্টে।
ফলে, অচিরেই সেটি ডমিন্যান্ট হয়ে উঠতে পারে, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সম্প্রতি নতুন একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, আমেরিকার একটি বিমানবন্দরের করোনা পরীক্ষায় গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম বিএ.২ ভাইরাসটির হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মাস্ক পরা পুনর্বহাল করার আবেদন জানিয়েছেন বিমান সংস্থাগুলির কর্তৃপক্ষ।
কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে ব্রিটেন, ইউরোপ ও চিনেও। এর মধ্যে চিনের অবস্থা সব চেয়ে খারাপ। সে দেশের ২০টি প্রদেশে পর্যটন নিষেধ করা হয়েছে। চালু হয়েছে লকডাউনও। চিনের প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘স্টেলদ ওমিক্রন’-এর প্রকোপেই ফের সে দেশে বাড়ছে করোনা।চিনের ‘জ়িরো কোভিড’ নীতিকে বারবার পরীক্ষায় ফেলছে সংক্রমণ। সাংহাই শহরেও হু হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। উপসর্গযুক্তেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই বাড়ছে উপসর্গহীন কোভিড পজ়িটিভদের সংখ্যাও। দৈনিক আক্রান্ত সেখানে এক হাজার পার করায় গুজব ছড়িয়েছিল সাংহাইয়েও কড়া লকডাউন বিধি জারি করা হয়েছে। কিন্তু বুধবার সে কথা ঠিক নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ইউরোপেও বাড়ছে সংক্রমণ, মঙ্গলবার জার্মানিতে নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৮৮ জন। এক সপ্তাহ আগের পরিসংখ্যাণ থেকে প্রায় ৪২ হাজার বেশি।
জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা জানিয়েছেন, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস, সুইজ়ারল্যান্ড ও ইটালিতে গত সপ্তাহ থেকেই বাড়ছে সংক্রমণ।মাঝে গতি কমলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় ফের মাথাচাড়া দিয়েছে সংক্রমণ। বুধবার ‘দ্য কোরিয়া ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি’ (কেডিসিএ)-র প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ২৪ ঘণ্টায় এক লাফে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন পাঁচ লক্ষ মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিএ.২ ভেরিয়েন্টটিই এখন ওমিক্রনের ডমিন্যান্ট ভেরিয়েন্ট।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন কোভিড-১৯-এর সঙ্গে জীবনযাপন করার পদক্ষেপ করছেন তাঁরা। ফলে, কোভিড সংক্রান্ত কড়া বিধি নিষেধের অনেকগুলিই বাতিল করা হবে। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিয়েছেন, ফলে যথাযথ ভাবেই সংক্রমণের মোকাবিলা করা যাবে। তবে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, মাস্ক পরতেই হবে।