আমেরিকার বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মারা সেই পণ্যবাহী জাহাজটি। ছবি: রয়টার্স।
গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমেরিকার বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মারা যে পণ্যবাহী জাহাজটি, সেই ‘এমভি দালি’-তে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও দাহ্য পদার্থ ছিল বলে জানাল আমেরিকান তদন্তকারী সংস্থা। ‘ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড’ (এনটিএসবি)-এর প্রধান জেনিফার হোমেনডি জানিয়েছেন, জাহাজটিতে বিপজ্জনক পদার্থ-বোঝাই ৫৬টি কন্টেনার ছিল। যার ওজন কমপক্ষে ৭৬৪ টন।
সাংবাদিক বৈঠকে জেনিফার বলেন, ‘‘এক জন শীর্ষস্থানীয় তদন্তকারী অফিসার ওই বিপজ্জনক পদার্থগুলি চিহ্নিত করেছেন। ৭৬৪ টন পদার্থই দাহ্য, ক্ষয়কারক ও আরও নানা কারণে বিপজ্জনক। ওর মধ্যে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিও ছিল।’’
এম ভি দালি-তে ২২ জন ভারতীয় নাবিক ছিলেন। জাহাজটিতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুতে ধাক্কা মারে। তাতে সেতুটি কার্যত পাটকাঠির মতো ভেঙে পড়েছিল। তবে নাবিকদের বুদ্ধি ও তৎপরতায় বহু মৃত্যু আটকানো যায়। তাঁরা ঠিক সময়ে বিপদবার্তা পাঠানোর জন্যই সেতুতে আগেভাগে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এত সাবধানতা সত্ত্বেও মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়। ৪ জনের দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। ধরে নেওয়া হয়েছে, তাঁরাও মারা গিয়েছেন।
এনটিএসবি জানিয়েছে, ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। তদন্ত শেষ দু’বছরও লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। সেতুর অবস্থা নিয়েও তদন্ত চলছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, এখনকার সেতু নির্মাণে যে ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, বল্টিমোরের সেতুতে তা করা হয়নি। জেনিফার বলেন, ‘‘সেতুটির অবস্থা সঙ্কটজনকই ছিল। সেতুটি এমন ভাবে তৈরি যে এর কোনও একটি ছোট অংশ যদি ভেঙে পড়ে, তা হলে সেতুর অর্ধেক, কিংবা গোটা সেতুটিই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।’’
এখনও ঘটনাস্থল থেকে সেতুর ভাঙাচোরা অংশ সরানোর কাজ চলছে। আধিকারিকেরা ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখছেন।