— ছবি সংগৃহীত
মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন কারও একচেটিয়া হতে পারে না, বিশ্বাস করেন তিনি। তাই ‘মহাকাশ প্রত্যেকের’ ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)-র প্রধান হিসেবে এই কথাটি ঘোষণা করতে পেরে দারুণ খুশি জোসেফ অ্যাশবাকার।
ছেলেবেলায় অস্ট্রিয়ায় পাহাড়ি খামারে বসে রাতের আকাশে তারা দেখা ছিল তাঁর নেশা। বয়স, লিঙ্গ নির্বিশেষে বহু মানুষই যে আজীবন সেই টান অনুভব করেন, সেটা নিজেকে দিয়েই অনুভব করেন অ্যাশবাকার। জানেন, শুধু শারীরিক ভাবে সুস্থ-সক্ষমরাই নন, শারীরিক কোনও প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা আটকায় না। অ্যাশবাকার খুশি, সেই স্বপ্ন সত্যির দরজা তাঁরা
খুলে দিতে চলেছেন।
বলা হয়, পঙ্গুও পাহাড় ডিঙোয়। কথাটা পাল্টে যাবে শীঘ্রই। এ বার মহাকাশেও যাবেন শরীরিক ভাবে বিশেষ সক্ষম ব্যক্তি! অ্যাশবাকার জানিয়েছেন, ইএসএ অদূর ভবিষ্যতে শারীরিক ভাবে বিশেষ সক্ষম কাউকে মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। বিশ্বে যা প্রথম বার ঘটতে চলেছে। এমন ব্যক্তিদের জন্য পোশাক থেকে মহাকাশযান বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন প্রয়োজন সেটা দেখাই এর উদ্দেশ্য। এ ছাড়া, মহাকাশ-বর্জ্যের সমস্যা নিয়েও কাজ করবেন ভাবী মহাকশচারীরা।
আগামী দশকে মহাকাশচারী হওয়ার জন্য ইউরোপের ২৫টি দেশ থেকে আবেদন চেয়ে বিপুল সাড়া পেয়েছে ইএসএ। আবেদন এসেছে ২২ হাজার। তার মধ্যে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, এমন ব্যক্তির সংখ্যা ২০০।
আগ্রহ বাড়ছে মেয়েদের মধ্যেও। ২০০৮-এ শেষ বার নিয়োগ অভিযান হয়েছিল। আবেদনকারীদের ১৫% ছিলেন মহিলা। এ বারে সেটা ২৪%। সংখ্যার হিসেবে ৫৪১৯ জন। ইএসএ এ পর্যন্ত মাত্র দু’জন মহিলাকে মহাকাশে পাঠিয়েছে। বিশ্বের ৫৬০ জন মহাকাশযাত্রীর মধ্যে মাত্র ৬৫ জন মহিলা, বেশির ভাগই আমেরিকার। মহাকাশ সফরে লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়ে আনাও অন্যতম লক্ষ্য এখন ইএসএ-র।
তবে প্রতিযোগিতা বেশ কঠিন। কারণ, শেষ পর্যন্ত ৫-৬ জনকে বেছে নেওয়া হবে নভশ্চর হিসেবে। জনা কুড়ি থাকবেন রিজ়ার্ভ বেঞ্চে। এই ক্ষেত্রে বরাবরই ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেনের দাপট থাকে বেশি। ব্রিটেন এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য না-হলেও ইএসএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। আবেদন এসেছে সেখান থেকেও। তবে এ বার গোটা ইউরোপ থেকে এত সাড়া পেয়ে বিস্মিত অ্যাশবাকার।