প্রতীকী ছবি।
‘দুষ্প্রাপ্য’ কোভিড টিকা নিয়ে যে জালিয়াতি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল, তা বহু আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করে রেখেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কলকাতায় ঘটলও তাই। সেই ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের ছায়া এ বার দেখা গেল জার্মানিতেও। অভিযোগ, উত্তর জার্মানির আট হাজারের উপর বাসিন্দাকে কোভিড টিকার বদলে স্যালাইন ইঞ্জেকশন দিয়েছেন এক নার্স। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই নার্স রেড ক্রসের সঙ্গে যুক্ত। ফ্রিসল্যান্ডের একটি টিকাকরণ কেন্দ্রে মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে বাসিন্দাদের ভুয়ো টিকা দিয়ে গিয়েছেন তিনি। আনুমানিক ৮৬০০ জনকে টিকার বদলে স্যালাইন দ্রবণ দেন তিনি।
ফ্রিসল্যান্ডের সরকারি কর্তা শেন অ্যামব্রসি বলেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত এই ঘটনায়। যাঁদের ভুয়ো টিকা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যাতে দ্রুত ভ্যাকসিন পান, অবিলম্বে সেই ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।’’ কিন্তু নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। তাই মার্চ-এপ্রিলে রফহাইসেন টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে যাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের সকলকেই নতুন করে প্রতিষেধক নিতে বলা হয়েছে। ফোন বা ইমেল করে তাঁদের জানানো হচ্ছে বিষয়টি। এর মধ্যে সরকারের কাছে মন্দের ভাল খবর এই যে, স্যালাইন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। ফলে ভুয়ো টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হননি। কিন্তু কেন ওই নার্স এই কাজ করেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নার্সের নামও প্রকাশ করা হয়নি।
বিশ্বের প্রথম সারির দেশে যদি এই হাল হয়, সে ক্ষেত্রে দরিদ্র দেশগুলিতে কী হচ্ছে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে আন্তর্জাতিক মহলে। তা ছাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ শেষ হতেই এখনও ঢের দেরি, তা হলে ছোটদের কী হবে!
সামনে তৃতীয় ঢেউ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ছোটরা। আশঙ্কা, মিউটেশন ঘটিয়ে শক্তি বাড়িয়ে প্রতিষেধকহীন শরীরে আরও জাঁকিয়ে বসবে ভাইরাস। এর মধ্যে দেড় বছরের কাছাকাছি স্কুল বন্ধ থাকার পরে অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষই পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সে ক্ষেত্রে ভয়, আরওই বিপদের মুখে পড়তে পারে ছোটরা।
আমেরিকায় ১২ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে টিকাকরণ চলছে। দেশের সার্জন জেনারেল বিবেক মূর্তি জানিয়েছেন, হয়তো এ বছরের শেষে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘সব যদি ঠিক মতো চলে, যা যা আশা করা হচ্ছে তা-ই হয়, সে ক্ষেত্রে এ বছরের শেষে ১২ বছরের নীচেও টিকাকরণ চালু হয়ে যাবে।
সরকার এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ছোটদের স্বাস্থ্য সবার আগে।’’ ছোটদের দেহে ভ্যাকসিনের প্রভাব জানতে ট্রায়াল চলছে এখনও। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষা বলে জানিয়েছে আমেরিকা সরকার।
গোটা বিশ্বে সবার আগে নিজেদের ‘করোনা-মুক্ত’ বলে ঘোষণা করেছিল নিউজ়িল্যান্ড। কিন্তু ফের সে দেশে ঢুকে পড়েছিল ভাইরাস। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন আজ জানিয়েছেন, এ বছর সীমান্ত বন্ধই রাখবেন তাঁরা। ২০২২ সালে ধাপে ধাপে সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। এ দেশে সংক্রমণ হার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও টিকাকরণের গতি খুব কম। প্রতিবেশি রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমণ কমেই বাড়ছে। রাজধানী ক্যানবেরায় লকডাউন জারি হয়েছে। এ অবস্থায় কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না নিউজ়িল্যান্ড।