হাফিজ সইদ। —ফাইল চিত্র।
ভারত-আমেরিকার সাঁড়াশি চাপে তাঁর বিরুদ্ধে সবেমাত্র ছোটখাটো পদক্ষেপ করা শুরু করেছে পাকিস্তান। আর তাতেই যেন গর্জে উঠলেন হাফিজ। তাঁকে গৃহবন্দি করার জন্য যে সুর এতদিন ভারতের বিরুদ্ধে বাজত, তা আজ বেজে উঠল খোদ ‘আশ্রয়দাতা’র বিরুদ্ধেই! দাবি করলেন, তাঁকে গৃহবন্দি রাখার পিছনে কোনও হাতই নেই ভারতের। পাক সরকারই তাঁকে বন্দি করে রেখেছিল।
শুক্রবার নাজিরা পাকিস্তানি ট্রাস্টের এক সভায় প্রকাশ্যেই এ কথা বলেন ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী এবং লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ। পাক সরকার কাশ্মীরি মানুষের কথা ভাবছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ওই সভায় হাফিজ বলেন, ‘‘মোদী সরকার নয়, আমাদের পাক সরকারই আমাকে ১০ মাস গৃহবন্দি করে রেখেছিল। তারা চায় না আমি কাশ্মীরের মানুষের জন্য লড়াই করি। কাশ্মীরি মানুষের আত্মত্যাগকে তারা অবমাননা করছে। কাশ্মীরিদের সমস্যা নিয়ে সরব হচ্ছি বলে পাক সংবাদমাধ্যমও আমাকে জঙ্গি বলেছে, এতে আমি ভীষণ আঘাত পেয়েছি।”
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে সামরিক ঘাঁটি তৈরির চেষ্টায় চিন
মুম্বই হামলার মূল চক্রীকে দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান আশ্রয় দিয়ে আসছে। ভারত-আমেরিকার প্রবল চাপ সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পাক সরকার। উপরন্তু বরাবরই তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছে। সম্প্রতি সে দৃশ্যের খানিকটা রদবদল হয়েছে। মার্কিন চাপের ফলে হাফিজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে পাক সরকার। সে দেশের সব উর্দু সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকার জানিয়ে দেয়, হাফিজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে আর্থিক সাহায্য করলেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে। ওই বিজ্ঞাপনে হাফিজের লস্কর ই তইবা, জামাত উদ দাওয়া, ফালাহ ই ইনসানিয়তকে জঙ্গি সংগঠন বলেও উল্লেখ করা হয়।
তবে এটা যে আমেরিকার কাছে সন্ত্রাস দমনের একটা বার্তা ছিল মাত্র, আদপে হাফিজের প্রতি আগের মতোই সহানুভূতিশীল সে দেশের সরকার, তা বেশ বোঝা যায়। এমন বিজ্ঞাপন দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই পাক প্রধানমনন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসি তাঁকে ‘সাহেব’ সম্বোধন করেন এবং ইসলামাবাদের চোখে তাঁকে সম্পূর্ণ ‘নিরাপরাধ’ বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তাতে যে ‘সাহেব’এর গোঁসা কমেনি তার প্রমাণ মিলল এ দিন।