কিম এবং মুন। ছবি: রয়টার্স।
ক’দিন আগেও যাদের একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা গোটা বিশ্বের কপালে ভাঁজ ফেলে দিচ্ছিল, সেই উত্তর কোরিয়া নাকি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে এখন এক কথায় রাজি। রবিবার এমনই দাবি করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের মুখপাত্র ইয়ুন ইয়ং চান।
সিওলের দাবি, গত শুক্রবার দুই কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টি ওঠে। সেখানেই উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন জানান, দেশের সবকটি পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র তিনি সামনের মাসেই বন্ধ করে দেবেন। নিরস্ত্রীকরণের কাজে স্বচ্ছতা আনার জন্য মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাতেও তিনি নাকি রাজি হয়ে গিয়েছেন।
অনেকেই বলছেন, এ তো আত্মসমর্পণ! বাবার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসা ইস্তক একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি, পরমাণু বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ, কথায় কথায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে নিশানা করার হুমকি— সব মিলিয়ে কিম যেন হয়ে উঠেছিলেন মূর্তিমান ত্রাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো কিমকে ‘রকেট ম্যান’ নামও দিয়ে ফেলেছেন। সেই কিমের ভোল বদল ঠিক কি কারণে?
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হুমকির রাজনীতিতে যে গোটা বিশ্বে এক ঘরে হয়ে পড়তে হবে, সেটা হয়ত কিমকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে চিন। সম্প্রতি চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকেই তাঁর সুর নরম। তা ছাড়া একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কাহিল করে ছেড়েছে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিকে। গত শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে কিম নাকি বলেন, ‘‘দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর হামলা চালানোর মতো মানুষ আমি নই। আলোচনার মধ্যে দিয়ে যদি সমস্ত সমস্যা মিটে যায়, তবে পরমাণু আস্ত্রের কী দরকার?’’
সামনেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বসার কথা। তবে কি সেই বৈঠকের কথা ভেবেই তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পথে হাঁটতে রাজি? বিনিময়ে কি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানাবেন কিম? প্রশ্নগুলো এড়ানো যাচ্ছে না। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপচারিতায় কিম নাকি বলেছেন, উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের ভুল ধারণা থাকতেই পারে। তবে আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত সমস্যা মিটে যাওয়া সম্ভব।