পিনাকার সফল পরীক্ষণ ভারতের। ছবি: পিটিআই।
বিশ্বের প্রতিরক্ষা বাজারে চাহিদা বাড়ছে ভারতের পিনাকা রকেট লঞ্চারের। আর সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার পিনাকা রকেট সিস্টেমের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পিনাকা হল ‘মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার’।
শুক্রবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘গাইডেড পিনাকা ওয়েপন সিস্টেম’-এর সফল পরীক্ষা করেছে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। আর সফল পরীক্ষা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের ‘আত্মনির্ভরতা’র আরও একটা সফল ধাপ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দেশের আর পাঁচটি ক্ষেত্রের মতো প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ক্রমশ ‘আত্মনির্ভর’ হয়ে উঠছে ভারত। এক সময় বিশ্বের উন্নত দেশগুলির অস্ত্রের জন্য মুখাপেক্ষী থাকা ভারত বর্তমানে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশকে অস্ত্র বিক্রি করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ভারতের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের। তা ছাড়া ডর্নিয়ের-২২৮ যুদ্ধবিমান, রকেট লঞ্চার, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, রাতেও দেখা যায় এমন বাইনোকুলার, শত্রুর গতিবিধি লক্ষ করা যায় এমন রাডার-সহ একাধিক সামগ্রী বিভিন্ন দেশকে বিক্রি করছে ভারত। এ বার সেই তালিকায় জুড়ল ‘পিনাকা রকেট লঞ্চার’।
পশ্চিম এশিয়ার দেশ আর্মেনিয়া আগেই ‘পিনাকা’ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। সূত্রের খবর, ফ্রান্সও এই অত্যাধুনিক রকেট সিস্টেম কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনাও চলছে। এখন চূড়ান্ত সিলমোহর পড়তে বাকি। রাশিয়ার গ্র্যাড বিএম-২১ রকেট লঞ্চারের পরিবর্ত হিসাবে ‘পিনাকা’-র আবির্ভাব। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় এই রকেট লঞ্চারকে সফল ভাবে কাজে লাগানো হয়েছিল। সেই যুদ্ধে দুর্দান্ত ভূমিকা ছিল ‘পিনাকা’র। পাহাড়ের উপর পাকিস্তানি সেনাদের বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দিতে এর প্রথম ব্যবহার করেছিল ভারত। তার পর ধাপে ধাপে এই সিস্টেমকে অত্যাধুনিক করা হয়েছে।
মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার সিস্টেম পিনাকায় দু’টি প্যাড রয়েছে। যার প্রতিটিতে ৬টি করে রকেট রয়েছে। ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে ১২টি রকেট ছুড়তে পারে এই লঞ্চার। পিনাকা-র আগের পাল্লা ছিল ৪০-৪৫ কিলোমিটার। বর্তমানে সেটি বেড়ে হয়েছে ৭৫-৯০ কিলোমিটার। ট্রাকে চাপিয়ে সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়।