ছবি: সংগৃহীত।
ইসলামি দেশগুলির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা কোণঠাসা হয়েছে পাকিস্তান। তার পিছনে ভারতের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক প্রয়াস রয়েছে। কাল থেকে ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন) গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের দু’দিনের বৈঠক। সূত্রের খবর, পাকিস্তানের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও আলোচ্যসূচিতে নেই কাশ্মীর। পাকিস্তানের অনুরোধে আমল দেয়নি সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশ, যাদের প্রভাব এই মুহূর্তে ওআইসি-তে সব চেয়ে বেশি।
গত কালই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, মুসলিম বিশ্ব যে সব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তার সবগুলি নিয়েই আলোচনা করবে ওআইসি। তার মধ্যে থাকবে জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়টিও। সেখানকার মানবাধিকার এবং মানবিক সমস্যাগুলির কথাও ফলাও করে বলা হয়েছিল পাক বিদেশমন্ত্রীর বিবৃতিতে। তবে এর পরে ওআইসি-র পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে যে বিবৃতিটি আরবি এবং ইংরেজি-তে দেওয়া হয়, তাতে লক্ষ্যণীয় ভাবে অনুপস্থিত কাশ্মীর। বলা হয়েছে, শান্তি এবং উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়া আসন্ন বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু হতে চলেছে। পাশাপাশি, প্যালেস্তাইন পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাও রয়েছে আলোচনার তালিকায়।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ৫৬ সদস্যের এই ওআইসি-র প্রধান দুই সদস্য সৌদি এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে ক্রমশ অবনতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ভারতও সমানতালে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে দৌত্য বাড়াচ্ছে, যা দ্বিগুণ অস্বস্তির পাকিস্তানের কাছে। দু’বছর আগে সৌদি আরবের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল ইসলামাবাদ। এখন সৌদি তাড়া দিচ্ছে দ্রুত সেটা ফেরত দেওয়ার জন্য। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরে সৌদি আরব মোদী সরকারের ওই সিদ্ধান্তে নাক গলাতে চায়নি। তাতে ক্ষুব্ধ ইমরান সরকার তুরস্ক এবং মালয়েশিয়াকে নিয়ে পৃথক ও নতুন গোষ্ঠী তৈরি করার চেষ্টা করেছিল ওআইসি-তে। সেটা তো ভেস্তে যায় বটেই, সৌদির বিষনজরে পড়ে পাকিস্তান। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও পাকিস্তান, আফগানিস্তানের নাগরিকদের ভিসা সাময়িক ভাবে দেওয়া বন্ধ করে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে। এর আগে সৌদির আমন্ত্রণে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে যখন বক্তৃতা দিতে আহ্বান করেছিল ওআইসি, তখন থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে তাদের।