স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন নিকোলা স্টার্জন। ছবি: রয়টার্স।
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন নিকোলা স্টার্জন। আজ এডিনবরায় এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই ঘোষণা করেন তিনি। যা শুনে বিস্মিত স্কটল্যান্ডের রাজনৈতিক মহল। তবে অনেকের মতে, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার দাবিতে ফের গণভোট না করাতে পেরেই সরে দাঁড়াচ্ছেন নিকোলা।
আজ সাংবাদিক বৈঠকে নিকোলা বলেন, ‘‘যখন থেকে দায়িত্ব নিয়েছি তখন থেকেই জানি, ঠিক সময়ে সরে যাওয়াটা সেই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই পড়ে। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, এখনই সেই ‘ঠিক সময়’। আমি নিশ্চিত, আমার জন্য, দলের জন্য ও দেশের জন্য এটাই ঠিক সিদ্ধান্ত।’’ স্টার্জন জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক ভাবনা-চিন্তা করার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘কারও মনে হতে পারে এটা ঝোঁকের মাথায় নিয়ে ফেলা একটা সিদ্ধান্ত। তা কিন্তু আদপেই নয়।’’ তবে স্টার্জন জানিয়েছেন, উত্তরসূরি না মেলা পর্যন্ত দায়িত্ব সামলাবেন তিনিই।
গত আট বছর ধরে স্কটল্যান্ডের প্রশাসনিক প্রধানের পদে ছিলেন নিকোলা। তিনিই স্কটল্যান্ডের প্রথম মহিলা ফার্স্ট মিনিস্টার। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার দাবিতে গণভোটের পরে নভেম্বরে ক্ষমতায় আসেন নিকোলা। তখন তিনি ঘোষণা করেছিলেন, স্কটল্যান্ডকে ‘স্বাধীন’ করাই হবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য। তাঁর নেতৃত্বেই স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি জাতীয় রাজনীতিতে একটি পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছিল।
সেই লক্ষ্যে গত বছর ফের একটি গণভোট করানোর জন্য তৎপর হন নিকোলা। ব্রিটিশ সংবিধান অনুযায়ী, স্বাধীনতার দাবিতে গণভোট করানোর জন্য স্কটল্যান্ডের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে ‘অনুমতি’ নিতে হবে। নিকোলা চেয়েছিলেন, ওয়েস্টমিনস্টারকে এড়িয়েই ফের স্কটল্যান্ডে গণভোট করাতে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে সেই মর্মে আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত সেই আর্জি মেনে নেয়নি। আজ পদত্যাগ ঘোষণা করে নিকোলা জানান, তিনি আশা করছেন যে, তাঁর উত্তরসূরি ‘স্বাধীনতার জন্য এই লড়াই’ চালিয়ে নিয়ে যাবে।
নিকোলার পদত্যাগের খবর পেয়ে প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে টুইট করেছেন, ‘‘অনেক বিষয়েই আমাদের মতের মিল হত না। কিন্তু দেশের জন্য তিনি যে ভাবে নিরলস পরিশ্রম করে গিয়েছেন, তার জন্য স্টার্জনকে ধন্যবাদ জানাই।’’