— ছবি সংগৃহীত
রাষ্ট্রপুঞ্জে মায়ানমারের দূতকে খুন অথবা জখম করার উদ্দেশ্য নিয়ে তাইল্যান্ডের এক অস্ত্র সরবরাহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল দু’জন মায়ানমারের নাগরিক। সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল নিউ ইয়র্কের পুলিশের তৎপরতায়। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম ফয়ো হেন হুতুত এবং ইয়ে হেন জাও। তাইল্যান্ডের যে অস্ত্র সরবরাহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তারা, সেই ব্যক্তি বার্মিজ সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করেন বলে আমেরিকার গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে মায়ানমারের নির্বাচিত সরকারের তরফে রাষ্ট্রদূত কাও মোয়ে তুন জানিয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই তাঁর প্রাণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি জানার পরে আমেরিকার তরফে তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।
নিউ ইয়র্কের সাইদার্ন ডিস্ট্রিক্টের অ্যাটর্নি অফিস সূত্রে বলা হয়েছে, ফয়ো হেন হুতুত এবং ইয়ে হেন জাও-এর বিরুদ্ধে বিদেশি আধিকারিকের উপরে হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিচারে তাঁদের সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে। রাষ্ট্রদূত কাও মোয়ে তুন বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরেই জুন্টা তাঁকে বরখাস্ত করলেও রাষ্ট্রপুঞ্জ জুন্টাকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় তিনি নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধি হিসেবেই থেকে গিয়েছেন।
সূত্রের খবর, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ধৃত ফয়ো হেন হুতুত আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-কে জানিয়েছেন, তাইল্যান্ডের ওই অস্ত্র সরবরাহকারী তাঁর সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করেন এবং প্রস্তাব দেন যে টাকার বিনিময়ে হামলাকারী ভাড়া করে রাষ্ট্রদূতকে জখম করে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। রাষ্ট্রদূত পদত্যাগে রাজি না হলে তাঁকে খুন করার প্রস্তাবও দিয়েছিল ওই অস্ত্র সরবরাহকারী। ফয়ো হেন হুতুত এবং ওই অস্ত্র সরবরাহকারী বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এবং রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলার ছক কষে। গোয়েন্দা সূত্রে জানানো হয়েছে, এই কাজের জন্য ইয়ে হেন জাও নামে ধৃত দ্বিতীয় ব্যক্তি ফয়ো-র অ্যাকাউন্টে ৪ হাজার ডলার দু’দফায় জমা করে দেয়। জুলাইয়ের শেষ দিকে এই লেনদেন হয়। ফয়ো গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, হামলা ঠিক ভাবে করা গেলে তিনি আরও ১ হাজার ডলার পেতেন।
রাষ্ট্রপুঞ্জে মায়ানমারের স্বেচ্ছাসেবী এক নিরাপত্তারক্ষী গত মঙ্গলবার এফবিআই-কে জানান যে, ফয়ো তাঁকে বলেছেন রাষ্ট্রদূতকে জখম অথবা হত্যা করার জন্য একজন ‘হিটম্যান’কে নিয়োগ করা হবে। অভিযুক্ত জাও স্বীকার করেছেন যে তিনি ফয়ো-কে টাকা দিয়েছেন এবং তা ওই অস্ত্র সরবরাহকারীর কথাতেই। এমনকি তার অনুরোধে আরও দু’জনকে আমেরিকায় আনার ব্যবস্থাও করছিল। আমেরিকার মাটিতে বিদেশি প্রতিনিধির উপর ভয়ঙ্কর হামলার এই ষড়যন্ত্রের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক পদস্থ কর্তা।