বেজিংয়ের জুগেঝুয়ান পাইকারি বাজারে সংক্রমণ ঠেকানোর জোর প্রস্তুতি। ছবি- রয়টার্স।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে আজ, বুধবার থেকেই কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হয়ে গেল বেজিংয়ে। চিনের রাজধানী শহর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার অন্তত বারোশো বিমান বাতিল করা হল। বাতিল করা হল কয়েকশো ট্রেন। বুধবার থেকেই কলেজের ক্যাম্পাসে ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস শুরু করতে বলা হয়েছে। এ দিন থেকেই। শহরের লাইব্রেরি, পার্ক ও মিউজিয়ামগুলিতে দিনে গড়ে যে ভিড় হয়, তাকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিনের সরকারি দৈনিক ‘গ্লোবাল টাইমস’ এই খবর দিয়েছে।
সোম ও মঙ্গলবার, এই দু’দিনে শুধু বেজিংয়েই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৩৭ জন। গত কাল আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ জন। ফলে, বেজিংকে ‘নো গো জোন’ বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। এরই পাশাপাশি, সংক্রমণ রুখতে বেজিংয়ে ৯০ হাজার মানুষের গণ রক্তপরীক্ষা শুরু হচ্ছে বলেও চিনা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে উহান প্রদেশে প্রথম সংক্রমণের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’) যখন অতিমারি ঘোষণা করল, তার পর থেকেই যাবতীয় আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ করে দেয় চিন। বিমান পরিষেবা শুধু চালু ছিল দেশের মধ্যে। উহানকে বাদ দিয়ে বেজিং-সহ চিনের অন্যান্য প্রদেশে।
কিন্তু সোম ও মঙ্গলবার হঠাৎ সংক্রমণের সংখ্যা-বৃদ্ধির পর বেজিংয়ের দু’টি বিমানবন্দরে মোট ১ হাজার ২৫৫টি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। চিনা রেল দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত যাঁদের ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল বেজিংয়ের মধ্যে ও বেজিং থেকে চিনের অন্যান্য প্রদেশে যাওয়ার জন্য, তাঁদের বাদ দিয়ে বাকি সকলের টিকিট বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের টাকা পুরোপুরি ফেরত দেওয়া হবে বলে চিনা রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কেউ যাতে চিনের অন্য প্রদেশগুলি থেকে এখন বেজিংয়ে না যান, সে ব্যাপারেও কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- হোঁচট খেলে হাত টেনে ধরার লোক পায়নি সুশান্ত, লিখলেন সুজিত সরকার
আরও পড়ুন- ‘আমি যদি তোমার ভেঙে যাওয়া মনটাকে জোড়া দিতে পারতাম... ’
গত ৬ দিন ধরে যাঁরা বেজিংয়ের শিনফাদি পাইকারি বাজারে গিয়েছেন, তাঁদের সকলকেই বাধ্যতামূলক ভাবে রক্তপরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিনা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বেজিংয়ে জরুরি ভিত্তিতে ৯০ হাজার মানুষের সব রকমের রক্তপরীক্ষা করানো হবে। বেজিংয়ের এক সরকারি কর্তার কথায়, “পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।’’
চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) বুধবার জানিয়েছে, মঙ্গলবার চিনা ভূখণ্ডে রক্তপরীক্ষায় মোট ৫৫ জনের কোভিড পজিটিভ হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১১ জনের কোনও প্রাথমিক উপসর্গ ছিল না।
মঙ্গলবার পর্যন্ত চিনে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজার ২৬৫। মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৪ জনের।