—ফাইল চিত্র।
দলের ভাঙন আটকে সরকারের নেতৃত্বের সঙ্কট মেটাতে শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। কিন্তু তাতেও সঙ্কট কাটেনি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির।
ওলির ইস্তফার দাবিতে অনড় দলের অপর চেয়ারম্যান (দুই চেয়ারম্যানের এক জন ওলি নিজে) পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড। দলের অন্য দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধবকুমার নেপাল ও ঝালনাথ খানাল এবং প্রভাবশালী নেতা বামদেব গৌতমও ওলির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা এবং অপদার্থতার অভিযোগ তুলে প্রচণ্ডের পাশে এসে দাঁড়ানোয় দলে একঘরে হয়ে পড়েছেন ওলি। শুক্রবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক অসমাপ্ত থাকার পরে অনেক রাত পর্যন্ত ওলির সঙ্গে প্রচণ্ডের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কার্যত নিষ্ফলা হয়। তবে দলে দুই শিবিরের ভাঙন রুখতে শনিবারের বৈঠকটি সোমবার পর্যন্ত স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।
শনিবার রাতে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিজের বালুয়াটারের বাসভবনে বসিয়ে রেখে ওলি নিজে গিয়েছিলেন শীতল নিবাসে রাষ্ট্রপতি বিদ্যা ভাণ্ডারীর সঙ্গে পরামর্শ করতে। এর আগে রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশন স্থগিত করিয়ে অনাস্থার সম্ভাবনা আটকেছেন ওলি। এ বার তিনি অর্ডিন্যান্স এনে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। এই অর্ডিন্যান্সে দলীয় নেতৃত্ব ও সংসদীয় দলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েও প্রধানমন্ত্রী থাকার বিধান আনা হতে পারে।
দলে কোণঠাসা হয়ে পড়ার পরেই জাতীয়তাবাদী জিগির তুলতে ভারতের তিনটি এলাকা লিপুলেখ, লিম্পিয়াধুরা ও কালাপানিকে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন মানচিত্র পার্লামেন্টে অনুমোদন করান ওলি। অনেকের অনুমান, চিনের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রেখে চলা ওলি বেজিংয়ের পরামর্শেই এই পদক্ষেপ করেন। এর ফলে ‘দেশদ্রোহী’ বদনাম থেকে বাঁচতে সমস্ত দল তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেও দলে সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। প্রচণ্ড-নেপাল-খানাল গোষ্ঠীর অভিযোগ, দলকে অন্ধকারে রেখে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভয়াবহ কূটনৈতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছেন ওলি। ভারতের বিরুদ্ধে তোলা তাঁর অপ্রমাণিত অভিযোগও পদের সঙ্গে মানানসই নয়।
আরও পড়ুন: চিনা সেনার মহড়ার মাঝেই দক্ষিণ চিন সাগরে রওনা মার্কিন রণতরীর
আরও পড়ুন: বিজেপির ‘ডিজিটাল এডিশন’ তৈরি করেছে করোনা, দাবি মোদীর
ওলি অভিযোগ করেছেন, ভারতই তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার চক্রান্ত করছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রচণ্ড বলেন, “না, ভারত নয়, দলের অন্যতম প্রধান হিসেবে আমিই আপনার পদত্যাগ দাবি করছি!” প্রচণ্ডের মাওবাদী কেন্দ্র ওলি-মাধব নেপালদের এনসিপি (এমএল)-এর সঙ্গে মিলে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি তৈরি করে, যারা দু’বছর আগে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নেপালে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু আড়াই বছরের মধ্যেই ওলি-প্রচণ্ড ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সেই দল ভাঙতে বসেছে।