ফাইল চিত্র।
নেপালের জমি চিন দখল করার অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হওয়ায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে কাঠমান্ডু। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি ভারতের অনুরোধ মেনে একটি সরকারি পাঠ্যপুস্তক ছাত্রদের মধ্যে বণ্টন স্থগিত রেখেছে সে দেশের শিক্ষা মন্ত্রক। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। বইটি নেপালের ভূখণ্ড এবং সীমান্ত সংক্রান্ত। এই পদক্ষেপ কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে সাউথ ব্লককে।
ভারতীয় এলাকা কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরাকে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে নেপালের সংসদে তা পাশ করানোর পরে প্রবল তিক্ততা তৈরি হয়েছে ভারত এবং নেপালের সঙ্গে। এমন একটি সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে যখন পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনের সঙ্গে ভারতের সংঘাত তুঙ্গে। ওলির এই প্রকাশ্য ভারত বিরোধিতার পিছনে চিনের হাত রয়েছে বলেই সে সময় দাবি করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এই টানাপড়েনের মধ্যে নতুন বাঁক আসে চিন নেপাল সম্পর্কে। ওলি সরকারের কৃষি মন্ত্রকের সার্ভে দফতরের রিপোর্টে বলা হয়, দেশের উত্তরে তিব্বত সীমান্তে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে চিন। আর সেই কাজ করতে গিয়ে অন্তত ১১টি স্থানে সীমান্ত লঙ্ঘন করে নেপালের জমি দখল করা হয়েছে। পাশাপাশি, নেপালের ভূখণ্ডের পাহাড়ি নদীগুলির গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়ে তিব্বতে জলের জোগানের ব্যবস্থাও পাকা করছে চিন! নেপাল-তিব্বত সীমান্তের পশ্চিমে হুমলা জেলায় ১০ হেক্টর এবং মধ্য অংশের রাসুওয়া জেলায় ৬ হেক্টর জমি ইতিমধ্যেই দখল করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চিন।
কূটনৈতিক শিবিরের দাবি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি নিজের দলের মধ্যে এবং জোটসঙ্গীদের কাছে এই রিপোর্ট প্রকাশের পর প্রবল বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েন। তাঁর ‘অন্ধ চিনপন্থা’ সমালোচিত হয়। এর পর নেপালে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সে দেশের বিদেশসচিবের বৈঠক হয়। ১৫ অগস্ট ওলি ফোন করেন মোদীকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে। মোদীর জন্মদিনেও শুভেচ্ছা জানান। এ বার পাঠ্যপুস্তক বিলি স্থগিত করে ওলি দিল্লিকে বার্তা দিতে চাইলেন বলে মনে করা হচ্ছে।