Sudan Violence

কান পাতলেই বিকট শব্দ, পুড়ছে বিমান! সুদানের রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা

সুদানে গত কয়েক দিন ধরেই পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। ক্ষমতার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে দেশের সেনাবাহিনী এবং আধাসেনাবাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

খারতুম শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:১২
Share:

সুদানের খারতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের একটি বিমান । ছবি: রয়টার্স।

কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির আওয়াজ। বিস্ফোরণের শব্দ। দাউ দাউ করে পুড়ছে একাধিক বাড়ি, দোকান। এমনকি, বিমানও। রাস্তার ধারে পড়ে অসংখ্য মৃতদেহ। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে পা রাখতে ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যাও। এমনই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে আফ্রিকার সুদান। সুদানে সেনা বনাম আধাসেনার রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের কারণে রাজধানী খারতুম-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০। অশান্তি ছড়িয়ে পড়ায় আহত হয়েছেন ১৮০০ জনেরও বেশি মানুষ। যদিও চিকিৎসকেদের একাংশের দাবি, হতাহতের সংখ্যা সরকারি হিসাবের থেকে অনেক বেশি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি উপগ্রহচিত্র প্রকাশ্য এনেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে সুদানের খারতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ইউক্রেনের বিমান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সুদানে গত কয়েক দিন ধরেই পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। ক্ষমতার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে দেশের সেনাবাহিনী এবং আধাসেনাবাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)। তুমুল অশান্তি চলছে দুই সামরিক বাহিনীর মধ্যে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলেছে, সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসেনাবাহিনীর লড়াই প্রথমে ওমদুরমানে শুরু হলেও তা ধীরে ধীরে রাজধানী খারতুম-সহ একাধিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আরএসএফের দাবি, তারা ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন, সেনাপ্রধানের বাসভবন, দেশের জাতীয় টেলিভিশন সম্প্রচার সংস্থার দফতর এবং খারতুমের বিমানবন্দরের দখল নিয়েছে। যদিও সুদানের সেনাবাহিনী তা মানতে নারাজ।

সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান আবদেল ফতেহ আল বুরহান জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ফের প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দখল নেবে সেনাবাহিনী। সুদানের রাজধানী খারতুমের বাসিন্দাদের সতর্ক করে সুদানের বায়ুসেনাবাহিনী জানিয়েছে, সুদানের বাসিন্দারা যেন বাড়ির বাইরে না বার হন। কারণ, বায়ুসেনা এখন আধা সেনার কার্যকলাপে কড়া নজর রাখবে। আকাশপথে বিমানবাহিনী টহল দেবে। প্রয়োজনে সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে তারা হামলাও করতে পারে। রয়টার্স অবশ্য জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই সুদানের আধাসেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনীর বিমান।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের দূত ভলকার পার্থেস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু পর থেকে দু’পক্ষই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে। আকাশ পথে হামলা চালাচ্ছে বায়ু সেনাও। আর এই যুদ্ধের জেরে বিপদের মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

২০১৯ সালের এপ্রিলে সুদানে সেনা অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। সেনা এবং গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা হামদকের নেতৃত্বাধীন সেই অন্তর্বর্তিকালীন সরকারকেও উৎখাত করে সেনা। সূত্রের খবর, আরএসএফের বড় অংশের আনুগত্য রয়েছে পূর্বতন সরকারের প্রতি। আর তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে সংঘাতের আবহ। অতীতে গণহত্যা-সহ একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে আরএসএফের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে জ্বলছে সুদান। প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কবে এই অশান্তি শেষ হবে, তা কেউই বলতে পারছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement