আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। ছবি: নাসা-র সৌজন্যে।
আর টেনেটুনে এক দশক। তার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)। তার আগেই সেখানে কর্মরত নভশ্চরদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রক, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনের অবস্থান। ভরশূন্য অবস্থায় সেটি দিন-রাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা অন্তর এক বার করে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে ১৯৯৮ সাল থেকে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর দাবি, বয়সের কারণে মহাকাশ স্টেশনের দেহে অসংখ্য ফাটল দেখা দিচ্ছে। তা ছাড়া পৃথিবীর কক্ষপথে জমা হওয়া নানা মহাকাশ-বর্জ্যের (‘স্পেস ডেব্রি’ বা ‘স্পেস জাঙ্ক’) কারণে মহাকাশ স্টেশনে অবস্থানকারী নভশ্চরদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ২০৩১ সালে সেটি পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাসা।
বন্ধ করার পর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে পৃথিবীর কক্ষপথে রাখতে চায় না নাসা। কারণ সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে মহাকাশ-বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভবিষ্যতে মহাকাশযান এবং নভশ্চরদের বিপদের আশঙ্কা সে ক্ষেত্রে আরও বাড়বে। তাই মহাকাশ স্টেশনকে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে বার করে এনে প্রশান্ত মহাসাগরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডুবিয়ে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে নাসা-র বিজ্ঞানীদের।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি বছরই কয়েক কোটি ডলার খরচ হয় নাসা-র। আমেরিকার করদাতাদের ভার কিছুটা কমাতে শেষ কয়েক বছর গবেষণার পাশাপাশি মহাকাশ স্টেশনটি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারেরও পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার। রয়েছে মহাকাশ পর্যটনের দরজা খোলা এবং ফিল্ম স্টুডিয়ো গড়ে তোলার প্রস্তাবও। ডিসেম্বরে নাসা জানিয়েছিল, মহাকাশ স্টেশনের বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য তিনটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে রাশিয়া পৃথিবীর কক্ষপথে ভাসমান বাতিল গোয়েন্দা উপগ্রহ ‘কসমস-১৪০৮’-কে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। প্রচণ্ড বেগে ঘুরতে থাকা কসমসের ভাঙা টুকরোগুলির কারণে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয় আশঙ্কা।