ভারতের প্রথম মহাকাশ অভিযান প্রকল্প গগনযান। — ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে যখন আমেরিকা-ইউরোপ মস্কোকে একঘরে করতে চাইছে, তখন বার বার ভারত মনে করিয়ে দিয়েছে, নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের নির্ভরতার। সংশ্লিষ্ট শিবিরের বক্তব্য, ভারতের এই কূটনৈতিক বার্তার ফলে এই মুহূর্তে ভারতের রুশ-নির্ভরতার জায়গাগুলিতে পাশে থাকতে চাইছে ওয়াশিংটনও। যা বিদেশনীতির প্রশ্নে ভারতের পক্ষে অবশ্যই লাভজনক। সূত্রের খবর, মহাকাশ গবেষণা এবং ভারতের প্রথম মহাকাশ অভিযান প্রকল্প গগনযানের জন্য নির্ধারিত চার জন মহাকাশচারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এ বার এগিয়ে এসেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাসংস্থা নাসা।
এ ব্যাপারে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নাসা। সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা এগিয়েছে বলে খবর।
গত কয়েক মাসে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বার বার আন্তর্জাতিক মঞ্চ এবং সাংবাদিক বৈঠকে ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠতার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। নয়াদিল্লির যুক্তি, ভারত যখন পাকিস্তানকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল তখন একমাত্র রাশিয়াই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কৌশলগত নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। এর পরেই প্রতিরক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সহায়তার প্রশ্নে ভারতের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে আমেরিকাও।
২০১৮ সালের ১৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহাকাশে ভারতীয় নভশ্চর পাঠানোর ঘোষণা করেছিলেন। অতিমারির কারণে সেই প্রকল্প রূপায়ণের তারিখ পিছিয়েছে। এরই মধ্যে ভারত এবং রাশিয়া একটি চুক্তি করে। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার একটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ভারতীয় বায়ুসেনার চার জন বাছাই করা অফিসারকে মহাকাশ অভিযানের প্রশিক্ষণ দেয়। রাশিয়ার ইউরি গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে সেই প্রশিক্ষণ চলেছে ২০২০ থেকে ’২১ পর্যন্ত। সূত্রের খবর, এর পরে কেটে গিয়েছে বছর দেড়েক। সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমের সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোনোর পরে বাইডেন প্রশাসন নড়ে বসেছে। কূটনৈতিক মহলের মতে, এর পরই মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের দিকে আমেরিকার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।