মোদীর নিশানায় আজ সন্ত্রাসবাদ

জানা গিয়েছে, আগামিকাল সন্ত্রাসবাদকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করলেও সে ভাবে পাকিস্তানের নাম করা হবে না প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়।

Advertisement

অগ্নি রায়

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৬
Share:

সন্ত্রাসবাদকে এক হাত নিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

সাম্প্রতিক অতীতে টানা এত দিন আমেরিকায় থাকেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে আগামিকাল তাঁর বক্তৃতা। সূত্রের মতে, তার আগে প্রায় এক সপ্তাহের এই মার্কিন সফরে, ওই বক্তৃতা মঞ্চের ভিত গড়তে দ্বিমুখী কৌশল নিয়েছেন মোদী। প্রথমত, সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে বারবার বিভিন্ন মাধ্যমে কড়া বার্তা দিয়ে পাকিস্তানকে একঘরে করার চেষ্টা। দ্বিতীয়ত, সাধারণ সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠকগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে উষ্ণায়ন, বাণিজ্য, দূষণ, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের মতো বিভিন্ন বিষয়ে জোট ঝালিয়ে নেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এই এক সপ্তাহে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, কাল যখন মঞ্চে উঠবেন মোদী, তখন বিশ্ব-সমর্থনে তিনি অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য শক্তির থেকে। আজ দিনভর প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী প্রায় ঝড়ের বেগে একের পর এক দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।

Advertisement

জানা গিয়েছে, আগামিকাল সন্ত্রাসবাদকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করলেও সে ভাবে পাকিস্তানের নাম করা হবে না প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। তবে পাক সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে দ্ব্যর্থহীন ভাবে সরব হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। নিউ ইয়র্কের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশনস’-এর আলোচনাচক্রে তাঁর মন্তব্য, “প্রতিবেশীর সঙ্গে সবাই কথা বলতে চায়। কিন্তু কী ভাবে সেই দেশের সঙ্গে কথা বলব, যারা আমাদের বিরুদ্ধে লাগাতার সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি অভিযোগকে অস্বীকারও করছে।” তাঁর কথায়, “আপনারা যদি কাশ্মীর এবং পাকিস্তান— এই দুটি শব্দ বলেন, তা হলে বাধ্য হব এর মধ্যে পার্থক্য করতে। মনে করি না, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে মূল সমস্যা কাশ্মীর। এটি দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যার একটি মাত্র।’’ তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে সংসদ হামলা থেকে মুম্বই সন্ত্রাসের উল্লেখ করেছেন জয়শঙ্কর, যেগুলি কাশ্মীর থেকে অনেক দূরে। জয়শঙ্কর বলেন, “বোঝা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সহজাত বিদ্বেষ এবং কাশ্মীরের বিষয়টি আলাদা।”

আগামিকাল মোদীর বক্তৃতার পর আসরে নামবে পাকিস্তান। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আক্রমণ শানাবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মোদী সরকারের মুসলমান বিদ্বেষ নিয়ে নিউ ইয়র্কে সরব হয়েছেন তিনি। সরব হবেন কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়েও। জয়শঙ্কর বলেন, “মনে করি না ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা বিপদের মুখে। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার পরাকাষ্ঠাকে ছড়িয়ে দেয় সমাজের মূল্যবোধ। ভারতের সমাজ এবং বিশেষত হিন্দু সমাজ বহুত্ববাদী ও ধর্মনিরপেক্ষ থেকে গিয়েছে।”

Advertisement

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক বাড়াতে গোটা দিন চলেছে ঝড়ের গতিতে বৈঠক। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছেন মোদী। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রগুলির নেতাদের সঙ্গেও কাল বৈঠক করেছেন তিনি। আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া-র সঙ্গে চর্তুদেশীয় বৈঠক করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাষ্ট্রপুঞ্জে আজ মোদী যখন বক্তৃতা দেবেন, তখন মূল ভবনের কাছের ‘চলো ইউ এন’ স্লোগান দেবেন হাজার পাঁচেক ভারতীয়। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা পাকিস্তান সমর্থকদেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement