জার্মানির মিউনিখে জি-৭ সম্মেলন উপলক্ষে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি পিটিআই।
পরিবেশ রক্ষার প্রশ্নে ভারত হাতে কলমে নিজেদের ভূমিকাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরতে পেরেছে। সোমবার মিউনিখে জি-৭ বৈঠকে পরিবেশ, শক্তি এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অধিবেশনে বলতে উঠে এই মর্মে সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “একটা ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে যে গরিব দেশ এবং গরিব মানুষেরা পরিবেশের বেশি ক্ষতি করে থাকে। কিন্তু হাজার বছর ধরে ভারতের ইতিহাস সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছে। অতীতের ভারত ছিল অত্যন্ত সম্পদশালী, তার পর কয়েক শতকের দাসত্ব, আবার এখন বিশ্বে ভারত দ্রুততম অর্থনৈতিক বৃদ্ধির তালিকায়। কিন্তু কোনও সময়েই ভারত পরিবেশ সংক্রান্ত নিজের প্রতিশ্রুতিকে লঘু করে দেখেনি।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, বিশ্বের ১৭ শতাংশ মানুষের বসবাস ভারতে। কিন্তু কার্বন নিঃসরণে ভারতের ভূমিকা মাত্র ৫ শতাংশ।
শক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের গরিব দেশগুলির পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করার জন্য এই মুহূর্তে আমেরিকা এবং পশ্চিমের কিছু দেশের চাপ রয়েছে ভারতের উপর। এ ক্ষেত্রে বিদেশ মন্ত্রক বার বার বলছে, ভারতের শক্তি আমদানি নির্ভর করে দেশের জাতীয় চাহিদা এবং অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতার উপর। আজ মোদী তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পশ্চিমের দেশগুলিকে শুনিয়ে বলেছেন, “আপনারা আশা করি সবাই একমত হবেন, শক্তি শুধুমাত্র ধনীদেরই হাতের মুঠোয় থাকবে এটা হতে পারে না। আর এখন ভূকৌশলগত কারণে যখন জ্বালানির দাম আকাশ ছোঁয়া, তখন এই কথাটা মনে রাখা আরও জরুরি।”
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় সম্মেলনে মোদীকে স্বাগত জানিয়েছেন। সম্মেলন চলাকালীন মোদী শক্তি, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, সন্ত্রাস-বিরোধিতার মতো বিষয়গুলি নিয়ে মত বিনিময় করেন জি-৭ গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে। সকালে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ব বৈঠক সারেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবোর্তো ফার্নান্ডেজের সঙ্গে। পরে শোলৎজ়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মোদী। প্রসঙ্গত এক মাস আগেই মোদী বার্লিন গিয়েছিলেন। সে বারেও বৈঠক হয়েছিল শোলৎজ়ের সঙ্গে। সেই বৈঠকের সূত্র ধরেই আজ দুই নেতা খতিয়ে দেখেন পরিবেশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি হস্তান্তর, বিনিয়োগ বাড়ানো, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের প্রসার। আন্তর্জাতিক বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলিতে আরও বেশি করে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসার সঙ্গে মোদীর বৈঠকে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, ওষুধ শিল্প, ডিজিটাল অর্থনীতি ও কোভিড টিকা নিয়ে কথা হয়েছে।