History

অক্ষত চুল, চোখের পাতা, শিরায় জমাট রক্তও! ২ হাজার বছরের চিনা সুন্দরীর মমি আজও এক রহস্য

Advertisement
শ্রুবা ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:০১
Share:
০১ ১৬

জিন হুই

০২ ১৬

অক্ষত মাথার চুল, টানাটানা চোখের পাতাও। তাঁর সৌন্দর্যকে ঈর্ষা করবেন যে কোনও মডেল। শুধু তাঁর বয়সটা একটু বেশি, হাজার দু’য়েক বছর। অলৌকিক ঘটনা নয়। চিনে আবিষ্কৃত ২ হাজার বছরের পুরনো এক মমি আজও বিশ্বের অন্যতম রহস্য।।

Advertisement
০৩ ১৬

সাল, ১৯৭১। সময়টা ঠান্ডা লড়াইয়ের। সম্ভাব্য বিমান হামলা থেকে বাঁচতে একদল চিনা শ্রমিক মাটি খুঁড়ে একটি আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছিলেন। এমনই সময় তাঁরা ‘খুঁজে পান’ জিন হুই কে।

০৪ ১৬

কে এই জিন হুই? তিনি প্রাচীন চিনের চাংশা সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লি ক্যাং এর স্ত্রী। তাঁকে ঘিরেই এই রহস্যের শুরু। চিনের হ্যান রাজবংশের রাজত্বকাল তখন। এই সময়টি ছিল চিনের স্বর্ণযুগ।

০৫ ১৬

জিন হুই-এর সমাধির খবর পেয়ে তৎপর হয় চিন সরকার। পাঠানো হয় প্রত্নতত্ববিদদের। সমাধিটির সঙ্গে ছিল হুইয়ের স্বামী লি ক্যাং ও এক তরুণের সমাধি। প্রত্নতত্ববিদদের দাবি, ওই তরুণ জিন হুইয়ের ছেলে।

০৬ ১৬

হুইয়ের সমাধি ছিল তাঁর পছন্দসই বস্তু দিয়ে ঘেরা। প্রচুর বহুমূল্য পোশাক, বাদ্যযন্ত্র দিয়ে ঘেরা ছিল হুইয়ের সমাধি। কিন্তু এই সব জিনিস প্রত্নতত্ববিদদের আকর্ষিত করেনি। করেছিল হুইয়ের মৃতদেহ। তাঁদের মতে, মৃতদেহটিকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন জিন হুইয়ের মৃত্যু মাত্র কিছু দিন আগেই ঘটেছে।

০৭ ১৬

তাঁর দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ছিল খুব ভাল অবস্থায়। হুইয়ের মাথার চুল, চোখের পাতা তো প্রায় নিখুঁত ছিলই, শিরায় রক্তও ছিল। ময়নাতদন্ত করে বিজ্ঞানীরা তাঁর শিরায় জমাট রক্তের সন্ধান পান। এর থেকেই তাঁরা জানতে পারেন হুইয়ের মৃত্যু হৃদরোগের কারণে হয়েছিল।

০৮ ১৬

হুইয়ের খাদ্যনালী, পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্ত্রে তরমুজের ১৩৮টি বীজ খুঁজে পাওয়া যায়, যেগুলো হজম করতে পারেননি হুই। তার আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।

০৯ ১৬

জিন হুইয়ের দেহটি ছিল মাটি থেকে প্রায় ১২ মিটার নীচে, বায়ুরুদ্ধ অবস্থায়। চারটি স্তরের কফিনের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ২০টি স্তরে রেশমের কাপড় দিয়ে প্যাঁচানো ছিল দেহটি।

১০ ১৬

দেহটি ৮০ লিটারের এক তরল পদার্থে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল। এই তরলের মধ্যে সামান্য ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। আশ্চর্য এটাই যে এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি যে কী তরলের মধ্যে হুইয়ের দেহটিকে রাখা হয়েছিল যার ফলে এখনও হুইয়ের চোখের পাতা, চুল, শিরায় রক্ত বর্তমান।

১১ ১৬

এমন ভাবে হুইয়ের দেহটিকে রাখা হয়েছিল যাতে বাইরের কিছু ভিতরে ঢুকতে বা ভিতর থেকে বাইরে কিছু বেরিয়ে আসতে না পারে। এই বিশেষ ব্যবস্থার জন্যেই হয়তো দেহটি সুরক্ষিত ছিল, মনে করেন বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ।

১২ ১৬

তৎকালীন নথি থেকে জানা যায় যে হুই ছিলেন ভীষণ অপব্যয়ী। তিনি সুন্দরী ও শৌখিন ছিলেন। তাঁর নিজস্ব বেতনভুক্ত বাজনাদার ছিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের ডাক পড়ত। পোশাক পরিচ্ছদ ও খাওদা-দাওয়ার দিকেও ছিল তাঁর বিশাল ঝোঁক। হুই নিজেও কিন নামক এক সাত তারের চিনা বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন। রূপসজ্জার জন্য প্রসাধনী বস্তুর সমাহার ছিল তাঁর সংগ্রহে।

১৩ ১৬

হুই নিজে অনেক শারিরীক সমস্যায় ভুগছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ধীরে ধীরে হুইকে দুর্বল করে তুলছিল। এর সঙ্গে তাঁর ওজনও বেড়ে চলছিল ক্রমাগত। ফলে, করোনারি থ্রম্বোসিস ও আর্টারিওস্ক্লেরোসিস বাসা বাঁধে তাঁর শরীরে।

১৪ ১৬

জিন হুইয়ের মৃতদেহটিকে মমি বলেই ধারণা করা হয়। তবে এটি সংরক্ষণের পদ্ধতি মিশরীয়দের থেকে খানিকটা আলাদা। এখনও সেই পদ্ধতির সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি।

১৫ ১৬

জিন হুইয়ের সমাধিস্থল থেকে হ্যান রাজবংশ সম্পর্কে অনেক তথ্যও জানা যায়। আগে এই সব তথ্য সম্পর্কে কিছুই জানতেন না সাধারণ মানুষ।

১৬ ১৬

জিন হুইয়ের দেহ ও তাঁর সমাধিস্থল প্রত্নতত্ববিদ ও বিজ্ঞানীদের কাছে গবেষণার এক অমূল্য বিষয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement