আলাস্কার সৈকতে। এপি
সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে অসংখ্য সামুদ্রিক পাখির মৃতদেহ। ক্যালিফর্নিয়া থেকে আলাস্কা— দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূলের বাসিন্দারা। তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতে আতঙ্কিত প্রকৃতিবিদেরা। ‘জলবায়ু পরিবর্তন’কেই একমাত্র কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এক বছরে কমপক্ষে ১০ লক্ষ সমুদ্রের মাছধরা পাখি ‘কমন মুর’-এর মৃত্যু হয়েছে। স্মরণকালে যা মনে করতে পারছেন না প্রকৃতিবিদেরা। তাঁদের অনুমান, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়াতেই এই বিপর্যয়। যার পিছনে অন্যতম কারণ ‘জলবায়ু পরিবর্তন’। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যাভাবে পড়তে হয় ‘কমন মুর’দের। ২০১৫ সালের গ্রীষ্ম থেকে ২০১৬ সালের বসন্ত, প্রায় না খেতে পেয়ে মরতে হয়েছে অসংখ্য পাখিকে। পাড়ে ভেসে আসে নিষ্প্রাণ দেহগুলি।
সমুদ্রবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, উত্তরপূর্ব প্রশান্তমহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রথম শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে, ২০১৫ সালের গ্রীষ্মে এল নিনো-র জন্য তা আরও বেড়ে যায়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সমুদ্রে এই উষ্ণ জলের স্রোত চলতে থাকে। ২০১৫-র গ্রীষ্ম থেকে ২০১৬-র বসন্ত, এই সময়টাতেই অন্তত ৬২ হাজার ‘কমন মুর’-এর মৃতদেহ মেলে। বিশেষজ্ঞদের তাই অনুমান, সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১০ লক্ষ তো হবেই।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ সংস্থা (ইউএসজিএস)-এর জন পিয়াট বলেন, ‘‘প্রশ্নটা হচ্ছে, একটা নির্দিষ্ট সময়ে ৬ হাজার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কী ভাবে ১০ লক্ষ পাখি মরে থাকতে পারে... কারণটা কী!’’ তাঁর ব্যাখ্যা, কমন মুরের গণমৃত্যু আগেও হয়েছে। কিন্তু সংখ্যা এত ভয়াবহ ছিল না। তা ছাড়া এই প্রজাতির পাখিদের মধ্যে অভিযোজন ক্ষমতা খুবই বেশি। সমুদ্রের গভীরে ঝাঁপ দিয়ে জলের অতল থেকে মাছ ধরার ক্ষমতা রয়েছে এদের। তদন্ত-রিপোর্ট দেখে পিয়াট ও তাঁর সহকর্মীরা বলছেন, কমন মুরেদের খাদ্যাভাস অনুযায়ী, তাদের ভাল পরিমাণ মাছের প্রয়োজন হয় প্রতিদিন। সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হয়তো খাদ্যাভাবে পড়তে হয়েছিল তাদের।