নরওয়ের পর্বতারোহী ক্রিস্টিন হরিলা। ছবি: সংগৃহীত।
দ্রুত শৃঙ্গ ছুঁয়ে নজির গড়ার নেশায় আহত শেরপার দিকে ফিরেও তাকালেন না পর্বতারোহী। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে নরওয়ের ক্রিস্টিন হরিলার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর দল বরফে শুয়ে থাকা আহত শেরপাকে উদ্ধার না করেই পর্বতশৃঙ্গের দিকে অগ্রসর হয়েছেন। কয়েক ঘণ্টা পরে ওই শেরপার মৃত্যু হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ছবি এবং ভিডিয়োর ভিত্তিতে এই দাবি করা হয়েছে। নেটাগরিকদের রোষের মুখে পড়েছেন ক্রিস্টিন।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নরওয়ের পর্বতারোহী। তাঁর দাবি, আহত শেরপাকে সব রকম সাহায্য করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর হুঁশ ফেরানো যায়নি। শেরপার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা।
গত মাসেই পর্বতারোহণের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন ক্রিস্টিন। বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে সবচেয়ে দ্রুত সামিট করার শিরোপা যুগ্ম ভাবে জয় করেছেন তিনি। ২৭ জুলাই ক্রিস্টিনরা ছিলেন চিন-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে কে২ শৃঙ্গের কাছে। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। এই শৃঙ্গের উচ্চতা ৮,৬১১ মিটার। কে২ বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ (এভারেস্টের পরেই)।
ক্রিস্টিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কে২ শৃঙ্গ ছোঁয়ার আগে এক পাকিস্তানি শেরপা অসুস্থ এবং আহত অবস্থায় বরফে পড়ে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেননি। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি এবং ভিডিয়োতে তেমনটাই দেখা গিয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পর ওই শেরপার মৃত্যু হয়। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। মৃত শেরপার নাম মহম্মদ হাসান। তিনি ক্রিস্টিনদের দলের সদস্য ছিলেন না বলে খবর। তাঁদের আগে অন্য একটি দল কে২-র উদ্দেশে যাচ্ছিল। সেই দলের সদস্য ছিলেন হাসান।
হাসান পাহাড়ে উঠতে গিয়ে দুর্গম, সংকীর্ণ একটি অংশ থেকে পড়ে যান। ওই সময় পাহাড়ে আবহাওয়াও প্রতিকূল ছিল। ক্রিস্টিনরাও যে কারণে বেশি দূর এগোতে পারেননি। বিতর্কের মাঝে সমাজমাধ্যমে মুখ খুলেছেন পর্বতারোহী। তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন,‘‘কে২তে কী হয়েছিল, তা নিয়ে অনেক কথা বলার আছে। হাসানের পরিবারের প্রতি আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। এই ঘটনার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত।’’ ক্রিস্টিন দাবি করেছেন, তাঁরা আহত শেরপাকে গরম জল এবং অক্সিজেন দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের পর্যটন বিভাগের আধিকারিকেরা শেরপার মৃত্যুতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।