পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইরাকের রাজধানীতে।—ছবি এপি।
কাঁদানে গ্যাস, পুলিশের লাঠি এবং সর্বোপরি মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে আজ ফের তাহরির স্কোয়ারে জড়ো হলেন শয়ে শয়ে ইরাকি। গোটা বাগদাদই উত্তপ্ত রইল দিনভর। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইরাকের রাজধানীতে অন্তত সাত জন নিহত হলেন আজ। ফলে গত কয়েক দিন মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৬০ ছাড়াল।
গত ১ অক্টোবর থেকে সরকারি বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে ইরাকে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বেকারত্বে ধুঁকছে দেশ, সাধারণ মানুষকে ন্যূনতম পরিষেবা দিচ্ছে সরকার, এ দিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরকারি দুর্নীতি। ইতিমধ্যেই দেড়শোরও বেশি বিক্ষোভকারীকে ইরাকের সেনা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। যার মধ্যে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে গত কয়েক দিনে।
জমায়েতে দাঁড়িয়ে আজ এক বিক্ষোভকারীর হুঙ্কার, ‘‘সরকারকে গদিচ্যুত করব আমরা। সাফ করে দেব।’’ তাঁর মাথায় জড়ানো ইরাকি পতাকা, গলায় ক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দেল মেহদি ও পার্লামেন্টের স্পিকার মহম্মদ আল-হালবাসি এক ডজনেরও বেশি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও তাতে সন্তুষ্ট নন বিক্ষোভকারীরা। এক বিক্ষুব্ধ বলেন, ‘‘ওঁদের এক জনকেও চাই না। হালবাসিও না, আব্দেল মেহদিও না। ওঁদের রাজত্ব ছাড়খার করবই।’’
বিভিন্ন জমানায় একাধিক আন্দোলনের সাক্ষী হয়েছে তাহরির স্কোয়ার। কিন্তু এ বারের ছবিটা একটু অন্য রকম। আজ দেখা যায়, তাহরির স্কোয়ারের সামনে রীতিমতো তাবু খাটিয়ে ধর্নায় বসেছেন বিক্ষোভকারীরা। এক দল স্বেচ্ছাসেবক তাঁদের খাবার, জল সরবারহ করছেন। জমায়েতে সবচেয়ে লক্ষণীয় মহিলা ও পড়ুয়াদের সংখ্যা। কালো বোরখা, হিজাবে ঢাকা আপাদমস্তক দুই বয়স্ক মহিলাকে দেখা যায়।
হাতে দেশের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন তাঁরাও। পিছনে ভাসছে পপ গান। পেশায় নার্স এক তরুণী বললেন, ‘‘এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। আমাদের প্রজন্ম মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।’’ আজ বাগদাদের ‘গ্রিন জ়োন’ (দূতাবাস ও সরকারি দফতর রয়েছে)-এ-ও ঢুকে পড়েন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। ১৯ বছরের এক যুবকের হুঙ্কার, ‘‘যাঁরা ওখানে (গ্রিন জ়োন) বসে ঘুমোন, তাঁদের সরতে হবে। এই আমাদের দাবি।’’ পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। গ্যাসের ক্যানের আঘাতে চার জন নিহত হয়েছে।