চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি রয়টার্স।
প্রথমে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার কেমেরোভো এলাকার কয়লা খনি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। সেই সংখ্যাটাই বেড়ে হয়েছে ৫২। সুরক্ষার গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে খনির দায়িত্বে থাকা তিন ম্যানেজারকে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন উদ্ধারকারী দলের ছয় সদস্যও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়েছে, অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ছয় উদ্ধারকারীর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৪০ জন খনি শ্রমিক।
সাইবেরিয়ার কেমেরোভো এলাকার বেলোভো শহরের কাছে লিস্তভায়াজনায়ার ওই কয়লা খনি থেকে গত কাল ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খনির ভিতরে তখন কমপক্ষে ২৮৫ জন শ্রমিক ছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরে বেশির ভাগ শ্রমিককেই বার করে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার পরেও ধোঁয়ায় আটকে পড়েছিলেন চল্লিশ জনেরও বেশি শ্রমিক। উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে স্থানীয় প্রশাসন জানায়, ভিতরে বড়সড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা থাকায় উদ্ধারকাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, খনির একটি ভেন্টিলেটর শ্যাফটের ধুলো থেকে আগুন ছড়ায় বলে মনে করা হচ্ছে। তার পরে আগুনের ফুলকি থেকে মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণ হয়। রাশিয়ার বড় বড় দুর্ঘটনায় তদন্ত করে থাকে যে কমিটি, তারা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, খনিতে শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। খনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই গাফিলতির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু হয়েছে।
দুর্ঘটনায় মৃতদের স্মরণে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে রুশ সরকার। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
উন্নত পরিকাঠামোর অভাবে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার খনি অঞ্চলে দুর্ঘটনা নতুন নয়। কেমেরোভোর থেকেও ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০১০ সালে। সে বার রাসপ্যাডস্কায়ার খনিতে দুর্ঘটনায় ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হন শতাধিক।