জলবন্দি: জাপানের ইয়োকোহামা উপকূলে আটকে থাকা সেই ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজ। বৃহস্পতিবার। এপি
জাপানের উপকূলে আটকে থাকা ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে ফের ৪৪ জন নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর মিলল। ওই জাহাজে থাকা ভারতীয় কেবিন ক্রু বিনয় সরকার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার জাহাজের ক্যাপ্টেন এমনই ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁল ২১৮। তবে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে জাহাজের কোনও কর্মী রয়েছেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
ওই জাহাজে আটকে থাকা উত্তর ২৪ পরগনার রামনগর থানার গোবিন্দপুরের বাসিন্দা স্বরূপ চম্পাদার ফোনে বলেন— ‘‘সরকার কী পদক্ষেপ করছে তা নিয়ে আমরা অন্ধকারে। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।’’ বিনয় এ দিন ফোনে জানিয়েছেন, জাহাজে ১৬০ জন ভারতীয় কর্মীর মধ্যে দু’জন বুধবার মারণ-ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জাহাজ সংস্থার তরফে বাকিদের দেশে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ দিন জাহাজটিকে বন্দর থেকে সরিয়ে মাঝসমুদ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্বরূপের কথায়, ‘‘কঠিন সময়ের সঙ্গে লড়াই করছি। সামনে এক অজানা আতঙ্ক। আমাদের আবেদন, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’ বিনয় বলেন, ‘‘আপাতত আমাকে বিশ্রাম করার নির্দেশ দিয়েছে জাহাজ সংস্থা। জাহাজের একটি ঘরে রয়েছি।’’ তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেক যাত্রীকে থার্মোমিটার, মুখোশ-সহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।
২০ জানুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা থেকে জাহাজটি রওনা দেয়। চিনের বন্দরে নোঙর ফেলেছিল সেটি। সেখান থেকে বেরোনোর পরে মাঝসমুদ্রে খবর মেলে, এক যাত্রীর দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন মিলেছে। ২ ফেব্রুয়ারি জাপান সরকারের নির্দেশে টোকিয়োয় ফেরে ওই জাহাজ। তার পর থেকে জাহাজে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এ দিকে উত্তর দিনাজপুরে বিনয়ের পরিবার উদ্বেগে। ছেলের দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন বিনয়ের মা চন্দ্রা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘চিন্তায় রয়েছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত ছেলে বাড়ি ফিরছে স্বস্তি পাচ্ছি না। সরকার কী পদক্ষেপ করে সে দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’’
করোনা-নজর
করোনাভাইরাস (সিওভিআইডি১৯) প্রভাবিত দেশ থেকে আসা নতুন ছ’জন যাত্রীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে আছেন তিন জন। বেলেঘাটা আইডি হাসাপাতাল ছাড়াও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এক জন আইসোলেশনে আছেন। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, এ-পর্যন্ত কারও শরীরে করোনার অস্তিত্ব মেলেনি।