ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জ়ারিফ।
তিনি আমন্ত্রিত নন জি৭ সম্মেলনে। কিন্তু আচমকাই ফ্রান্সের বিয়ারিৎজ়ে এলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জ়ারিফ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হল শহরের মেয়রের দফতরে। থাকলেন ফরাসি বিদেশমন্ত্রী, ব্রিটিশ ও জার্মান কর্তারাও।
রাস্তার ঠিক উল্টো দিকের হোটেলেই চলছে জি৭ সম্মেলন। যেখানে হাজির স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যাঁর সঙ্গে ‘বৈঠকের প্রশ্নই নেই’ বলে জানিয়ে দিয়েছিল ইরান। ট্রাম্প মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিয়ারিৎজ় ছাড়ার আগে জ়ারিফ বলে গিয়েছেন, ‘‘সামনের রাস্তা কঠিন। কিন্তু চেষ্টাটা চালানো যায়।’’
ট্রাম্পের দাবি, পশ্চিমের অন্য রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে তাঁর ভালই জমেছে! যদিও বাণিজ্য সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, ইরান-সহ নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বাকি নেতাদের নীতিগত পার্থক্য এই সম্মেলনে প্রভাব ফেলছে বলেই মত বিশ্লেষকদের। বিশেষত ইরান। মাকরঁর সঙ্গে গত শুক্রবারও প্যারিসে কথা হয় জ়ারিফের। মাকরঁ বলেছেন, ইরানকে কী বার্তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে জি৭-ভুক্ত দেশগুলো একমত। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, ‘‘আমি ও সব নিয়ে কিছুই বলিনি। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করব। মানুষের মুখ তো বন্ধ করা যায় না।’’ আবার মাকরঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সেরে টুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘এত দিনের মধ্যে এটাই আমাদের সেরা বৈঠক।’’ বিশ্ব-বাণিজ্যকে ঘিরে বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে তাঁর টানাপড়েন চলছে বলে আলোচনা চললেও তা নস্যাৎ করেই ট্রাম্প জানান, ও সব বাজে কথা।
বিশ্ব জুড়ে মন্দার আবহেই চলছে জি৭ সম্মেলন। যদিও ট্রাম্প আছেন ট্রাম্পেই। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে তিনি টুইট করেছেন, ‘‘বেশ কিছু ভুয়ো খবরের চ্যানেল বলেছে, জি৭-এর অন্য দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মসৃণ নেই। আসল কথা হল, ভালই আলোচনা চলছে। আর আমাদের দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট ভাল করছে— বিশ্বে সেটা চর্চার বিষয়।’’
অথচ ট্রাম্প এসেই আয়োজক দেশ ফ্রান্সের দিকেই হুমকি ছুড়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলির উপরে ডিজিটাল কর তুলে না-নিলে ফরাসি ওয়াইনের উপরে আমেরিকা এমন শুল্ক চাপাবে যা তারা এর আগে দেখেনি। হুমকি শুনে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, ট্রাম্প যদি সত্যি সেটা করেন, তা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজের মতো করে বিষয়টি দেখবে।