সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার। পিটিআই
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সামনেই রাষ্ট্রীয় মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাংহাই কোঅপরেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের শেষে বিশকেক ঘোষণাপত্রেও সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াইয়ের বিষয়টি গৃহীত হয়েছে।
তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বল থেকেই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বিদেশের মাটিতে ধারাবাহিক ভাবে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন মোদী। প্রথম দু’টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে (মলদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কা) তাঁকে দেখা গিয়েছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার প্রশ্নটিকেই সামনে নিয়ে আসতে। বিশকেক-এও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে তফাত এটাই যে, এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
শুধু মোদীর বক্তৃতাতেই নয়, এসসিও-র ঘোষণাতেও সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কোথাও পাকিস্তানের নাম করা হয়নি। বলা হয়েছে, ‘সাংহাই কোঅপারেশনের বিশকেক ঘোষণাপত্রে সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থাকে মেনে না-নেওয়ার প্রশ্নে সব রাষ্ট্রপ্রধান একমত হয়েছেন। নিরাপত্তা এবং কৌশলগত যাবতীয় চ্যালেঞ্জ এখন সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। চরমপন্থী চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। গণহত্যার জন্য সামরিক সাজসরঞ্জামের প্রসার ঘটছে, অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এই সব রুখতেই ঘনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
অত্যন্ত জরুরি। এসসিও-র সদস্য দেশগুলি একযোগে সন্ত্রাসবাদের ঘোর নিন্দা করছে।’
বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, বিশেকেক ঘোষণা আসলে মোদীর জয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন, সেগুলিকেই রাখা হয়েছে যৌথ ঘোষণাপত্রে। বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই যৌথ বিবৃতির অন্যতম শরিক দেশ পাকিস্তানও। মোদী আজ সকালেই বলেছেন, ‘‘যে সব দেশ সন্ত্রাসবাদে পুঁজি সরবরাহ করছে, সহায়তা করছে— তাদের দায় নিতে হবে।’’
পাকিস্তানের দিকে তর্জনী নির্দেশ করার পাশাপাশি মোদী বলেছেন, সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎপাটিত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করা হোক। এসসিও-র মূল শক্তি এবং দর্শন ব্যাখ্যা করতে গিয়েও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছেন তিনি। মোদীর কথায়, ‘‘গত রবিবার আমার শ্রীলঙ্কা সফরের সময়ে আমি সেন্ট অ্যান্টনিস চার্চে গিয়েছিলাম। সন্ত্রাসবাদের নগ্ন রূপ সেখানে দেখেছি।’’ জঙ্গিবাদ-বিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে মোদী বলেছেন, সাহিত্য এবং সংস্কৃতি সমাজকে একটি ইতিবাচক দিশা দেখায়। যুবকদের মধ্যে চরমপন্থার প্রসারকে আটকায়। আফগানিস্তানের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘এসসিও-র সুস্থিতি এবং নিরাপত্তার জন্য সবল এবং সমৃদ্ধ আফগানিস্তান খুবই জরুরি। আমি খুশি যে, এসসিও-আফগান পথ নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে।’’