হাতে হাত: কিনদাওয়ে এসসিও সম্মেলনের আগে শি চিনফিং এবং নরেন্দ্র মোদী। শনিবার। পিটিআই
দেড় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার। গত বার চিনে এসেছিলেন উহাহানে, প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনার উদ্দেশ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ফের চিনে এলেন কিনদাওয়ে সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন তথা এসসিও-র ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। সম্মেলনের আগে ফের এক বার চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক হল দুই শীর্ষনেতার। ডোকলামের স্মৃতি সরিয়ে রেখে ভারত ও চিন যে সামনে এগোচ্ছে, তার স্পষ্ট বার্তা মিলল এই বৈঠকে। ঠিক হয়েছে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারত থেকে অ-বাসমতী চালও আমদানি করবে চিন। ২০১৯-এ ভারতে গিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের জন্য মোদীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন শি।
মোদী আজ দুপুরে এখানে পৌঁছনোর কিছু পরেই শি-র সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সই হয় দু’টি সমঝোতা পত্র (মউ)। প্রথমটি নদীর জল সংক্রান্ত তথ্যের আদানপ্রদান নিয়ে। চিনের সাংপো ভারতে ঢুকে নাম পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র। গত বছর ব্রহ্মপুত্রের জলে কাদামাটি ও দূষণ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সাংপোর আশপাশে ঢালাও নির্মাণকাজ না কি ভূমিকম্পের কারণে নদী দূষিত হচ্ছে— সে বিষয়ে তথ্য চাওয়ার দাবি ওঠে। মনে করা হচ্ছে, এ দিন স্বাক্ষরিত মউয়ের ভিত্তিতে নিয়মিত জল-তথ্য আদানপ্রদানের ব্যবস্থা চালু হলে এই জাতীয় পরিস্থিতি এড়ানো যাবে মসৃণ ভাবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও এটি সাহায্য করবে। অতীতে জল-তথ্য আদানপ্রদানের একটা ব্যবস্থা চালু ছিল দু’দেশের মধ্যে। ডোকলাম নিয়ে ৭৩ দিনের অচলাবস্থার সময়ে বেজিং এই তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
দ্বিতীয় মউটি ভারতের চাল রফতানি নিয়ে। বর্তমানে ভারত থেকে শুধু বাসমতী চাল নেয় বেজিং। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারতের অন্যান্য চালও নিতে সম্মত হয়েছে চিন। বাণিজ্য ঘাটতি নিয়েই আমেরিকার সঙ্গে তিক্ততা তৈরি হয়েছে চিনের। সেই ক্ষেত্রেই ভারতের সঙ্গে এই সহযোগিতার বার্তা চিন-ভারত বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অর্থবহ বলে মনে করা হচ্ছে।
উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাবকত মিরিজ়িয়য়েভের সঙ্গেও আজ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে বৈঠক করেন মোদী। সফরের মূল উদ্দেশ্য এসসিও-র সম্মেলন। এই প্রথম আট দেশের জোটের নতুন সদস্য হিসেবে সম্মেলেন অংশ নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। বাকি সদস্যরা হল, চিন, রাশিয়া, কাজখস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তান। সম্মেলনে সন্ত্রাস-বিরোধী চুক্তি হবে। এই চুক্তিতে পাক জঙ্গি সংগঠনগুলির নাম রাখা নিয়ে এখনই চাপ দিতে চাইছে না সাউথ ব্লক। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও এসেছেন মোদীর সফরসঙ্গী হয়ে।