ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো। —ফাইল ছবি
ব্যক্তিগত আক্রমণ করে কু-কথা বলার রেওয়াজ কূটনীতিতে নেই। একমাত্র তখনই সেটা বলা হয়, যখন সেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ভেঙে ফেলার ইচ্ছে থাকে কোনও এক পক্ষের। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টোর সাম্প্রতিক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে করা মন্তব্যটির পরে ভারত এটাই বুঝে নিতে চাইছে, শীত কাটার পরে কি আবার উত্তপ্ত এবং রক্তাক্ত হতে চলেছে সীমান্ত? নাকি নিজেদের দল ও সরকারকে স্বদেশে প্রাসঙ্গিক রাখার জন্যই এই ঘৃণা বর্ষণ? তবে উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন, দিল্লি কূটনৈতিক ভাবে মুসলিম বিশ্বে পাকিস্তানকে একঘরে করার কাজ শুরু করতে চায় বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর। মুসলিম বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এখন সম্পর্ক ভাল হওয়ায় সে কাজে কিছুটা সুবিধে পাওয়া যাবে বলেও মত সাউথ ব্লক সূত্রের।
বিলাবলের কু-কথার উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয় সাউথ ব্লকের কাছে। বিলাবল এমন একটি জোট সরকারের অংশ যার নেতৃত্বে রয়েছেন পিএমএল(এন)-এর শাহবাজ় শরিফ। ইমরান খানের অপসারণের পরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে বিশেষজ্ঞ কূটনৈতিক শিবির ভেবেছিল, এ বার কিছুটা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু বিলাবলের মন্তব্যে এক ধাক্কায় পিছিয়ে গেল সমস্ত ইতিবাচক উদ্যোগের সম্ভাবনা। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, হয় কট্টর ভারত-বিদ্বেষী ভাবমূর্তি গড়ে ইমরানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে চাইছেন বিলাবল। অথবা নতুন সামরিক নেতৃত্বের নির্দেশেই তাঁর এই পদক্ষেপ। পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি-র সদস্য বিলাবলের জোটসঙ্গী পিএমএল(এন) ভারতের প্রতি অপেক্ষাকৃত ইতিবাচক অবস্থান নেওয়া এবং আলোচনার চালানোর পক্ষপাতী। তা তারা সরকারে থাকুক বা বিরোধী দল হিসেবে।
তবে যে কারণেই হোক, বিলাবলের মন্তব্যের পরে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক কূটনীতিতে ভারত সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলছে। প্রাথমিক ভাবে প্রবল নিন্দা করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। নয়াদিল্লির অনুমান, কূটনৈতিক পথে পরিস্থিতি সামলানো এখন সহজতর কারণ ইসলামাবাদের এককালীন ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক এখন পাকিস্তানের তুলনায় ভাল। ভারত এবং পাকিস্তানের পরেই তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়াকে শীঘ্রই ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করবে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে দু’দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকের পরে তুরস্কের সঙ্গেও সম্পর্কের উন্নতির পথে ভারত। ফলে মুসলিম বিশ্বে পাকিস্তানকে একঘরে করে দেওয়ার চেষ্টায় ভারত আরও সক্রিয় হবে বলে সূত্রের খবর।