শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
২৩ সেপ্টেম্বর: সরকার যে প্রতিশ্রুতি পাঁচ বছরে পালন করেনি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি তা এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ায় শনিবার অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা কর্মীরা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ দিন ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের হাত থেকে জল খেয়ে প্রায় ৩৩ ঘণ্টার অনশন ভঙ্গ করে বলেন, “এ বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হলে আর ভোট চাইতে পারবেন না। আর ভোট না-চেয়ে আমাদের ভোট পাবেন— এমনটা মনে করাটাও ঠিক হবে না।” দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলেও আগামী ৬ অক্টোবর সোহরাবর্দী উদ্যানে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ
তাঁরা করবেন।
২০১৮ সালে গত নির্বাচনের ইস্তাহারে শাসক আওয়ামী লীগ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য যে ৭টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জয়ী হয়ে সরকার গড়ার পরে তার একটিও বাস্তবায়ন করেনি বলে অভিযোগ ঐক্য পরিষদের। এ দিকে মাস তিনেক পরে বাংলাদেশে ফের সাধারণ নির্বাচন। সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি পুরণের দাবি করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দু’বছর ধরে নানা সভা-সমাবেশ করেছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। ধারাবাহিক কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই শুক্রবার থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের প্রাঙ্গণে ৪৮ ঘণ্টার অনশনে অংশ নেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। অশীতিপর রানা দাশগুপ্ত এ দিন সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লেও হাসপাতালে যেতে অস্বীকার করেন। অসুস্থ হয়ে পড়া দু’জন মহিলা নেত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বহু রাজনৈতিক দলের নেতা অনশন মঞ্চে এসে সংহতি জানিয়ে যান।
শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে তাঁর উপদেষ্টা তথা শাসক দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়্যারম্যান কবির বিন আনোয়ার অনশন মঞ্চে এসে ঘোষণা করেন, আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি সংখ্যালঘুদের জাতীয় কমিশন গঠন। সরকার এটা অক্টোবরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। ধর্মীয় বৈষম্য বিলোপ আইনটি ইতিমধ্যে সংসদে পেশ করা হয়েছে। কালক্ষেপ না-করে তা পাশ করানো হবে। অর্পিত সম্পত্তি আইন ও পার্বত্য শান্তি চুক্তি শেখ হাসিনার উদ্যোগেই হয়েছে। তা যাতে পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়,
এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা করবে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর হয়ে তিনি এই আশ্বাস দিচ্ছেন।
এর পরে পরিষদ নেতৃত্ব অনশন প্রত্যাহার করলেও রানা দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের সবাই আশ্বাস দেয় আর প্রতারণা করে। আমরা আর প্রতারণার শিকার হতে চাই না। অক্টোবরের মধ্যে সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের আশ্বাস বাস্তবায়ন হয় কি না আমরা দেখব। না হলে সেই মতো কঠোর পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেব।”