—ফাইল চিত্র।
সন্তান হারানোর যন্ত্রণা সইতে হয়েছে তাঁকেও। জানালেন মেগান মার্কল। গর্ভপাত নিয়ে পশ্চিমী দেশগুলিতেও ছুৎমার্গ রয়েছে। নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গেলেও সচরাচর তা নিয়ে মুখ খোলেন না মহিলারা। তাঁদের উৎসাহ জোগাতেই নিজের গর্ভপাতের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী।
আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’- এ ডাচেস অব সাসেক্স মেগানের লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন মেগান। তিনি জানিয়েছেন, করোনার সঙ্গে গোটা বিশ্ব যখন যুঝছে, সেইসময় ব্যক্তিগত জীবনে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হন তিনি। জুলাই মাসের এক সকালে আচমকাই তাঁর গর্ভপাত হয়ে যায়।
মেগান লিখেছেন, ‘ছেলে আর্চির ডায়পার পাল্টাচ্ছিলাম। আচমকাই তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। ছেলেকে কোলে নিয়েই মাটিতে পড়ে যাই আমি। তখনও গান গেয়ে ভোলাচ্ছিলাম ওকে। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম যে কিছু একটা ঠিক নেই। নিজের প্রথম সন্তানকে দু’হাতে আঁকড়ে ধরে থাকা অবস্থাতেই বুঝতে পারছিলাম যে দ্বিতীয় সন্তানকে হারাচ্ছি’।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই টিকাকরণ শুরু হয়ে যেতে পারে আমেরিকায়, চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি
মেগান জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় হ্যারিও ভেঙে পড়েন। তবুও হাসপাতালে তাঁকে সামলাতেই ব্যস্ত ছিলেন। দু’জনেই বুঝতে পারছিলেন না, কী ভাবে এই যন্ত্রণা কাটিয়ে বেরিয়ে আসবেন তাঁরা। কিন্তু বুঝতে পারেন, হাসপাতালের ১০০ জন মহিলার মধ্যে ১০ থেকে ২০ জনের অন্তত এই যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
২০১৯-এর ৬ মে প্রথম বার মা হন মেগান। তাঁদের ছেলে আর্চির বয়স এখন দেড় বছরের বেশি। জুলাই মাসে গর্ভপাতের সময় তিনি কত মাসের সন্তানসম্ভবা ছিলেন, তা যদিও খোলসা করেননি মেগান। তবে বেশিরভাগ সন্তানসম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রথম দু’-তিন মাস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই গর্ভপাতের সময় মেগানও দু’-তিন মাসের সন্তানসম্ভবা ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মেগান। এ বছরের গোড়ার দিকে রাজপ্রাসাদের চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। প্রথমে কানাডায় থাকবেন বলে স্থির করলেও শেষমেশ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় সংসার পাতেন তাঁরা। ব্রিটিশ রাজপরিবারের রক্ষণশীল মনোভাবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারাতেই মেগান ও হ্যারি নতুন জীবন শুরু করেন বলে শোনা যায়।
আরও পড়ুন: বড় শহর থেকে সংক্রমণ এ বার গ্রামেও, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে আমেরিকায়
ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়াকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন। গর্ভপাতের কথা প্রকাশ্যে এনে মেগান ফের একবার প্রথা ভাঙলেন বলে মনে করছেন অনেকেই। এ নিয়ে রাজপরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে প্রিন্স হ্যারির মামা, প্রয়াত ডায়ানার ভাই চার্লস স্পেন্সর হ্যারি ও মেগানকে সমবেদনা জানিয়েছেন।