বিশ্বকাপ জিতলেও যাব না হোয়াইট হাউসে, সিদ্ধান্তে অনড় মেগান

ট্রাম্প-মেগানের এই ছায়াযুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল দিন কয়েক আগে। সমান্তরাল ভাবে এগিয়েছে দু’পক্ষের রাজনৈতিক তরজাও। মহিলা ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরুতে যার সূত্রপাত করেন মেগান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০০:৩৩
Share:

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে গোল করার পরে মেগানের উচ্ছ্বাস নিয়ে তৈরি হয়েছে এই ট্রাম্প-বিরোধী মিম। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দুর্ধর্ষ জোড়া গোল হোক বা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিশানা করে ঝোড়ো আক্রমণ— চলতি সপ্তাহে বার বার শিরোনামে এসেছেন মার্কিন মহিলা ফুটবল টিমের কো-ক্যাপ্টেন মেগান র‌্যাপিনো। শুক্রবার ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে দলকে সেমিফাইনালে তুলে যিনি বলেছেন, ‘‘জিতলেও হোয়াইট হাউসে না-ঢোকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তা থেকে এখনও সরছি না।’’

Advertisement

ট্রাম্প-মেগানের এই ছায়াযুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল দিন কয়েক আগে। সমান্তরাল ভাবে এগিয়েছে দু’পক্ষের রাজনৈতিক তরজাও। মহিলা ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরুতে যার সূত্রপাত করেন মেগান। সারা স্টেডিয়াম তখন উঠে দাঁড়িয়ে গলা মেলাচ্ছে জাতীয় সঙ্গীতে। অথচ মেগান চুপ। মেগানের আগে আর কোনও শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড় এই ‘স্পর্ধা’ দেখাননি। পুলিশি অত্যাচার ও জাতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ২০১৬-য় সান ফ্রান্সিসকোর প্রাক্তন ফুটবলার কলিন ক্যাপারনিকও একই কাজ করেছিলেন। কলিনের প্রভাব স্বীকার করেই মেগান ম্যাচের শেষে বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তিনি ‘চলমান প্রতিবাদ’।

মেগানের কথায়, ‘‘আমি নিজে বর্ণবৈষম্য বা পুলিশি নির্যাতনের শিকার হইনি। আমার পরিবারের কেউ কখনও রাস্তায় মরে পড়ে থাকেননি। কিন্তু দেশের কিছু মানুষকে যখন এই রকম হিংসার শিকার হতে হচ্ছে, তখন আমি হাত গুটিয়ে থাকতে পারি না।’’

Advertisement

মেগানের এই কথায় ও কাজে চটলেও, গোড়ায় প্রায় কিছুই বলেননি ট্রাম্প। শুধু বলেন, ‘‘এখানে প্রতিবাদ কোথায়? ছিটেফোঁটাও তো নজরে আসছে না। তবে দলের বাকিরা সত্যিই প্রশংসনীয়। মেয়েরা সত্যিই প্রতিভাবান।’’ এরই মধ্যে মঙ্গলবার মেগানের একটি পুরনো সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয় একটি ম্যাগাজ়িনে। জানুয়ারির সেই সাক্ষাৎকারে এক সাংবাদিককে মেগান বলছিলেন, ‘‘ওয়ার্ল্ড কাপ জিতলেও আমি কখনও হোয়াইট হাউসে যাব না।’’ গত সোমবার স্পেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছয় আমেরিকা। তার পরেই মেগান বলেন, ‘‘আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে এখনও সরে আসিনি। আমার মা যদিও একেবারেই খুশি না।’’

তত দিনে অবশ্য ট্রাম্পও নেমে পড়েছেন আসরে। মেগানকে বিঁধে প্রেসিডেন্ট টুইট করেন, ‘‘আগে তো জিতুন! তার পরে কথা বলবেন।’’ আরও লেখেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত মেগান বা তাঁর দলকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এ বার বলছি, জয় হোক বা হার, মেয়েদের দলকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। দেশ, হোয়াইট হাউস বা জাতীয় সঙ্গীতকে অসম্মান করা উচিত হয়নি মেগানের। বিশেষত যখন তাঁর জন্য ও গোটা দলের জন্য এত কিছু করা হয়েছে।’’

হোয়াইট হাউস ‘বয়কট’ করলেও, মার্কিন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ডেমোক্র্যাট আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো কর্তেজ়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন মেগান। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পৌঁছনোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওকাসিয়ো টুইট করেন, ‘‘হোয়াইট হাউসে না হোক, ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ আসার আহ্বান জানাচ্ছি মেগান র‌্যাপিনো ও তাঁর দলকে। মেগান জবাব দিয়েছেন, ‘‘ধরে নিন পৌঁছে গিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement