এই মুখোশধারীরাই ব্যাট, ধাতব লাঠি নিয়ে বেধড়ক মারে প্রতিবাদীদের।—ছবি রয়টার্স।
বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছিলই। তার মধ্যেই রক্তাক্ত হংকংয়ের রাস্তা। কাল মাঝরাতে হংকংয়ের ইউয়েন লং এলাকায় বিক্ষোভকারীদের উপরে চড়াও হয় এক দল মুখোশধারী। ব্যাট, ধাতব লাঠি নিয়ে বেধড়ক মারে প্রতিবাদীদের। এই হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৫ জন বিক্ষোভকারী। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কালকের ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল থেকেই উত্তপ্ত স্বশাসিত এই অঞ্চল। ফেসবুক লাইভ করে অনেক বিক্ষোভকারীই গোটা হামলাটি সরাসরি দেখিয়েছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, সাদা শার্ট বা টি-শার্ট পরা ওই দলটা মুখ ঢেকে এসে প্রতিবাদীদের উপরে চড়াও হয়। বেশ কিছু ক্ষণ তাণ্ডব চালিয়ে কয়েকটি গাড়িতে করে তারা পালায়। সব ক’টি গাড়িরই নম্বর প্লেট মূল চিন ভূখণ্ডের। চিন সরকারের ভাড়া করা গুন্ডা বাহিনী এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
সেই সঙ্গে গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, মেট্রো স্টেশনে, রাস্তায় যখন বিক্ষোভকারীদের বেধড়ক মারা হচ্ছে, তখনই পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে ফোন যায়। কিন্তু ঘটনার অন্তত এক ঘণ্টা পরে সেখানে এসে হাজির হয় পুলিশ বাহিনী। তত ক্ষণে রক্তে ভেসে যাচ্ছে ইউয়েন লংয়ের রাস্তা।
গত কাল সকাল থেকেই অশান্তি ছড়াচ্ছিল হংকংয়ে। গত রবিবারের মতোই কাল বিক্ষোভকারীরা জড়ো হচ্ছিলেন শহর জুড়ে। প্রত্যর্পণ আইন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও প্রশাসনিক প্রধান ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ চলছে। ব্রিটেনের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়ে নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার কথা বললেও হংকংয়ের প্রতিটি বিষয়ে চিন নাক গলাচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তার মধ্যে চিনের প্রতি ক্যারির অত্যধিক আনুগত্য বেজিংয়ের আধিপত্য বিস্তারের কাজটা আরও সহজ করে দিচ্ছে বলেও দাবি তাঁদের। সব মিলিয়ে ক্যারির পদত্যাগ আর হংকংয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে ইউয়েন লংয়ে চিন সরকারের একটি প্রশাসনিক দফতরে কাল ডিম ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। মুছে দেওয়া হয় হংকংয়ের জাতীয় প্রতীক। চিন বিরোধী গ্রাফিতিতে ভরিয়ে দেওয়া হয় প্রশাসনিক ভবনের দেওয়াল। যার সমালোচনায় আজ সকাল থেকেই সরব বেজিং। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আজ স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘কিছু চরমপন্থী বিক্ষোভকারীর জন্য ‘এক রাষ্ট্র দুই ব্যবস্থা নীতি’ লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই আচরণ একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।’’ সেই সঙ্গে বিক্ষোভ রুখতে পুলিশের ভূমিকারও প্রশংসা করেছে চিন সরকার। ওই মুখপাত্রের আরও দাবি, ভবিষ্যতেও হিংস্র প্রতিবাদীদের আটকাতে হংকং পুলিশ যা যা পদক্ষেপ করবে, তাতে সম্পূর্ণ সমর্থন থাকবে বেজিংয়ের।