বন্যায় ভেসে যাওয়া অঞ্চলে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছে সেনা। সোমবার। ইন্দোনেশিয়ার মালাকা টেঙ্গায়। ছবি পিটিআই ।
ঘূর্ণিঝড় সেরোজার কবলে বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়া এবং ইস্ট টিমোর দ্বীপ। দু’টি দেশেরই বিস্তীর্ণ অঞ্চল হড়পা বান এবং ধসের কবলে। দুই দেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৯১ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সূত্রগুলির দাবি। নিখোঁজও অসংখ্য মানুষ। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৭০। নিখোঁজও ৭০, জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। আর ইস্ট টিমোরের সরকারি হিসেব বলছে সেখানে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২১ জন।
হড়পা বানের জেরে কার্যত বর্জ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে একাধিক এলাকা। বহু স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাঁচা বাড়ি স্রোতের সঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বানের জলের তোড়। ভেসে গিয়েছে পাকা বাড়িও। উপড়ে গিয়ে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে গাছ। প্রায় ২০ ফুট সমান ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের তট জুড়ে। এর মাঝেই চলছে অবিরাম বৃষ্টিপাত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির পর্দায় উঠে এসেছে এই ধ্বংস-চিত্র। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় অন্তত এই পরিস্থিতির কোনও বদল আসবে না-বলেই আশঙ্কিত আবহবিদেরা।
এই বিপর্যয়ে এক রাতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন অনেকে। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের দিকে ধেয়ে যাওয়ার পথে শক্তি বাড়ছে ঝড়টির। যার জেরেই ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্গম অঞ্চল, ইস্ট ফ্লোরেসের ভয়াবহ চিত্র ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বানের জেরে কাদামাটির নীচে চাপা পড়েছে বহু বাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তা। এমনকি ব্রিজও। তার মধ্যেই কাদামাটি সরিয়ে সরিয়ে একের পর এক মৃতদেহ তুলে আনছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। শব রাখার বস্তায় তোলা হচ্ছে দেহগুলিকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ইস্ট ফ্লোরেসেরই লেমবাটা নামে একটি দ্বীপের চার বাসিন্দাকে পাহাড়ের কোল থেকে ভাসিয়ে একেবারে সমুদ্রের ধারে নিয়ে ফেলে জলের তোড়। তিন জন বেঁচে গেলেও তাঁদের মধ্যে এক জন প্রাণ হারিয়েছেন।
ইস্ট টিমোর দ্বীপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজধানী দিলি। সেখানে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনের অংশটিও ভেঙে রীতিমতো মাটির স্তূপে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সংস্থারয়েছে। শনিবার পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় এনএলডি-র এক সদস্যের। রাজনৈতিক বন্দিদের এক সংগঠন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে সেনা-বিরোধী কমপক্ষে ৬০ জনের।