মার্ক ব্লুমফিল্ড
এক সময়ে মাদার টেরিজার বিশেষ সহকারী হিসেবে কলকাতায় কাজ করেছিলেন তিনি। ৫৪ বছর বয়সি সেই স্বেচ্ছাসেবী কর্মী মার্ক ব্লুমফিল্ডকে খুন করার অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক মার্শাল আর্ট বিশেষজ্ঞের। ৬১ বছর বয়সি কলিন পেনকে এ সপ্তাহে দোষী সাব্যস্ত করে ব্রিটেনের সোয়ানজ়ি ক্রাউন কোর্ট। অন্তত ১৫ বছর জেলে থাকতে হবে তাকে।
এ বছর জুলাই মাসের ঘটনা। সোয়ানজ়ির একটি পাবে দু’পক্ষের বচসা বাধে। মার্ককে মারধর করে হত্যা করে মার্শাল আর্ট বিশেষজ্ঞ কলিন। গত বৃহস্পতিবার আদালতে ওঠে তদন্ত রিপোর্ট। জানা যায়, ঘটনার দিন কলিনের বান্ধবীকে নিয়ে মার্কের সঙ্গে তার ঝগড়া বাধে। পাবের মধ্যেই মার্ককে ‘শিক্ষা দিতে’ স্বঘোষিত ‘হার্ড ম্যান’ কলিন ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। মাটিতে ফেলে মার্ককে মারতে শুরু করে কলিন। তার পর গলা ধরে মাটিতে ঘষটাতে ঘষটাতে নিয়ে যায় মার্ককে এবং মাথায় ঘুসি মারে। এখানেই শেষ হয়নি ‘শিক্ষা’ দেওয়ার। পাবের বাইরে নিয়ে গিয়ে আরও দু’বার মার্কের মাথায় ঘুসি মারে সে। অচৈতন্য মার্ক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর। দু’দিন বাদে হাসপাতালে মারা যান মার্ক। পুলিশ জানিয়েছেন, মার্ককে ও ভাবে মারধরের পরেও কলিন থামেনি। সিসিটিভি ফুটেজ লোপাট করতে পাবের কম্পিউটারটি তুলে নিয়ে ভেঙে ফেলতে যায় সে। যদিও ফুটেজ পেয়ে যায় পুলিশ।
আদালতে দাঁড়িয়েও নিজেকে নিরাপরাধ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল কলিন। প্রথমে দাবি করেছিল, আত্মরক্ষার জন্য সে এই কাজ করেছে। কিন্তু আদালত তা অগ্রাহ্য করায় কলিনের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের খুন করার উদ্দেশ্য ছিল না। তা ছাড়া বয়সও হয়েছে। যতটা সম্ভব কম শাস্তি দেওয়া হোক তাকে। কিন্তু আদালত তা মানেনি। বিচারক পল টমাস জানিয়েছেন, বয়স হলেও কলিনের শরীর-স্বাস্থ্য খুবই ভাল আছে। ওই দিন কলিনের ‘শক্তি-প্রদর্শন’ থেকেই তা বোঝা যায়। আদালত জানিয়েছে, ন্যূনতম ১৫ বছর জেলে থাকতে হবে তাকে। তার পরে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যায় কি না, তা বিচার করবে প্যারোল বোর্ড।
মার্কের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী প্রকল্পের অংশ হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন মার্ক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ১৯৯০-এর দশকে কলকাতায় মাদার টেরিজার বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করা। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মেয়েদের স্কুল তৈরিতে সন্ন্যাসিনীদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন মার্ক।