হাকান আয়জল এবং তাঁর স্ত্রী সেমরা।
স্ত্রীকে বলেছিলেন নিজস্বী তুলতে যাবেন। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও রাজি হয়ে গিয়েছিলেন এক কথায়। খাদের ধারে দাঁড়িয়ে যখন দু’জনে নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত, তখনও স্ত্রী ভাবতে পারেননি, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি পরমুহূর্তে রাম ধাক্কা দেবেন তাঁকে। চোখের পলক ফেলার আগেই হাজার ফুট নীচু খাদে ছিটকে পড়ে শেষ হয়ে যাবেন তিনি। ৩০ বছরের সেম্রা ভাবেননি। আর ভাবেননি বলেই তাঁর শেষ ছবিটি তোলার কয়েক সেকেন্ড পরেই তাঁকে পড়ে থাকতে দেখা গেল পাথুরে খাদে দলাপাকিয়ে যাওয়া মাংসপিন্ড হয়ে।
ঘটনাটি তুরস্কের। নিহত সেম্রার স্বামী হাকান আয়জলকে গ্রেফতারও করা হয়েছে ইতিমধ্যে। পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর প্রথমে গোটা ঘটনাটিই অস্বীকার করেছিলেন তিনি। পরে অবশ্য জেরার মুখে স্বীকার করেন। পুলিশকে হাকান জানিয়েছেন, স্ত্রীর নামে থাকা জীবন বিমার টাকা পেতেই তাঁকে মেরে ফেলেছেন তিনি।
হাকান আর সেমরার এই ছবিটিও প্রকাশ্যে এসেছে। ছবি: সংগৃহীত।
সেম্রা উঁচুতে উঠতে ভয় পেতেন। উচ্চতার আতঙ্কে ভুগতেন তিনি। তবু আয়জল নিজস্বী তুলতে চান শুনে তিনি না বলেননি। রাজি হয়েছিলেন। সেম্রাকে নিয়ে জনহীন এক সুন্দর এলাকায় গিয়েছিলেন আয়জল। তাঁর কুকীর্তি হয়তো অজানাই থেকে যেত কিন্তু গোটা ঘটনাটি নজরে পড়ে যায় এক পর্যটকের। আয়জলদের থেকে অনেকটাই দূরে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করছিলেন তিনি। সেই রেকর্ডিংয়েই ধরা পড়ে যায় দৃশ্যটি। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামলে ওই ভিডিয়ো ক্লিপ হাতে আস তাঁদের। প্রমাণ-সহ গ্রেফতার করা হয় হত্যাকারী আয়জল।
সম্প্রতি হাকানের মামলাটি আদালতে উঠলে তাঁকে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে জানিয়েছে, ৩০ বছরের আগে তাঁকে মুক্ত করা বা জামিন দেওয়ার কথা ভাবাই হবে না।