স্মৃতি হাতড়েই গ্রামের এই নকশা এঁকেছিলেন লি।
১৯৮৮। বাড়ির বাইরে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বছর চারেকের এক শিশুকে। ত্রিশ বছর বাদে নিজের পরিবারকে ফিরে পেলেন তিনি। তা-ও আবার স্মৃতি হাতড়ে গ্রামের নকশা এঁকে! লি জিংউয়েই-এর গল্প হার মানাবে কোনও চিত্রনাট্যকেও।
চিনের দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশের একটি গ্রাম থেকে অপহৃত হয়েছিলেন লি জিংউয়েই। অপহরণের পর তাঁর নতুন ঠিকানা হয় সুদূর হেনান প্রদেশের এক পরিবারে। বাড়ির সামানে থেকে তাঁকে কেউ তুলে নিয়ে গিয়েছিল, এ টুকুই মনে রয়েছে লির। তাঁর নাম কী ছিল, কোথায় বাড়ি, গ্রামের নাম, এমনকি বাবা-মায়ের নামও স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছিল।
কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে লি-র একটা বিষয়ই স্মৃতিতে থেকে গিয়েছিল। সেটা হল গ্রামের পরিবেশ। তার মনে ছিল, গ্রামটা দেখতে কেমন। বাড়ির সামনের ধানখেত, পুকুর, দূরেই একটা পাহাড়। সেখানে বাঁশের ঝাড়। অপহরণের আগে বাড়ির আশপাশের এই দৃশ্যই মাঝেমধ্যে আঁকত ছোট্ট লি। আর সেটাই যেন ৩০ বছর পর জাদুর মতো কাজ করল।
স্মৃতি হাতড়ে বাড়ির বাইরের সেই দৃশ্য এঁকেছিলেন লি। গ্রামটা কেমন সেটাও কাগজে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। আর সেই ছবি নেটমাধ্যমে পোস্ট করে এমন গ্রাম কোথায় আছে, তা জানতে চেয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, চিনের জননিরাপত্তা মন্ত্রকের নজরে আসে সেই ছবি এবং আবেদন। এর পরই তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। ইউনানের ঝাওটঙে সেই ছবির বর্ণনা অনুযায়ী একটি গ্রামের সন্ধান পায় মন্ত্রক। সেখানেই শুরু হয় লি-র পরিবারের খোঁজ। এক দম্পতির খোঁজ পেয়েছিল মন্ত্রক। কিন্তু তাঁরা লি-র বাবা-মা কি না নিশ্চিত হতে পারছিলেন না সরকারি কর্তারা। শেষমেশ ওই দম্পতির ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। লি-র ডিএনএ-র সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হয়। আর সেই ডিএন পরীক্ষার পরই জানা যায়, ওই দম্পতিই অপহৃত হওয়ার লি-র বাবা-মা।