মিসিসগার দার আল-তাওহিদ মসজিদ।
ভালুক তাড়ানোর রাসায়নিক স্প্রে ও ধারালো কুঠার হাতে একটি মসজিদে আক্রমণ চালালো এক দুষ্কৃতী। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে কানাডার মিসিসগা শহরে। এই ঘটনায় কারও প্রাণহানি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। তবে রাসায়নিক স্প্রেতে কেউ কেউ আহত হয়েছেন। ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ বছর বয়সি ওই যুবক শনিবার সকাল সাতটার সময় হঠাৎ করেই মিসিসগার দার আল-তাওহিদ মসজিদে প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি স্প্রে করতে শুরু করে। সেই সময়ে ফজরের নমাজ পড়া চলছিল। প্রাথমিক ভাবে লোকজন হকচকিয়ে গেলেও তার পরে তাঁরাই ওই যুবককে ধরে আটকে দেন। জানা গিয়েছে, মসজিদে যাঁরা নমাজ পড়ছিলেন, তাঁদের সামনের সারির এক জন ওই যুবকের হাত থেকে কুঠারটি কেড়ে নিয়েছিলেন। পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। প্রথমে ভয়ের আবহ তৈরি হলেও পরে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ মইজ় ওমর। তার পূর্ব কোনও অপরাধের ইতিহাস রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, এই আক্রমণ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। একটি বিবৃতি দিয়ে সেই কথাই জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। ওমরের বিরুদ্ধে ধারাল অস্ত্র হাতে আক্রমণ, বিপজ্জনক ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক বস্তু দিয়ে আক্রমণ, বিপজ্জনক অস্ত্র রাখা, আতঙ্ক সৃষ্টি করা ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে ব্রাম্পটন কোর্টে নিয়ে শুনানির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনাটির কড়া সমালোচনা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। টুইটারে পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, হিংসা ও সংঘর্ষের কোনও স্থান কানাডায় নেই। দার আল-তাওহিদ মসজিদে যা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। সেই সঙ্গে যাঁরা ওই দুষ্কৃতীকে প্রতিরোধ করেছিলেন তাঁদের সাহসেরও প্রশংসা করেছেন ট্রুডো। ট্রুডোর সুরে সুর মিলিয়েছেন কানাডার অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। ন্যাশনাল কাউন্সির অব কানাডিয়ান মুসলিমের সদস্য নাদিয়া হাসান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলার সময়ে মসজিদে কম পক্ষে ২০ জন সেই সময়ে নমাজ পড়ছিলেন। ঘটনার ফলে প্রথমে চমকে গেলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই হামলাকারীকে প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তাঁরা। যাঁরা এখনও ঘটনার প্রভাব থেকে বেরোতে পারেননি, তাঁদের জন্য মসজিদের তরফ থেকে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুষ্কূতীর প্রতিরোধকারীদের প্রশংসা করেছেন আক্রান্ত মসজিদের ইমামও।
এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কানাডা। গত জুন মাসে অন্টারিওতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক জন পরিবারের উপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দেয় এক হামলাকারী। সেই ঘটনায় চার জন মারা গিয়েছিলেন।