ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপ। —ফাইল চিত্র।
সামরিক ক্ষেত্রে মলদ্বীপকে নিঃশর্তে সহযোগিতা করবে চিন। দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়াকে আরও ‘জোরদার’ করার লক্ষ্যে সোমবারই দুই দেশেই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সম্প্রতি, নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাকে সরে যাওয়ার ‘আর্জি’ জানিয়েছিল সে দেশের ‘চিনপন্থী’ সরকার। এই আবহেই এ বার সামরিক ক্ষেত্রে চিন-মলদ্বীপ আরও কাছাকাছি আসার ইঙ্গিত দিল। কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের অনুমান, বিগত কয়েক বছর ধরে নয়াদিল্লি যে সামরিক সহযোগিতার হাত মলদ্বীপের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল, এ বার তার বিকল্প হিসাবে চিনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে মহম্মদ মুইজ্জুর সরকার।
রবিবার চিনের আন্তর্জাতিক সামরিক বোঝাপড়া সংক্রান্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক তথা মেজর জেনারেল জিয়াং বাওকুনের সঙ্গে বৈঠক করেন মলদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহম্মদ ঘাসান মামুন। বৈঠকের পর সামরিক বোঝাপড়া নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী স্থির হয়, নিঃশর্তে মলদ্বীপকে সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে চিন। পরে এই চুক্তির বিষয়ে নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে মলদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। যদিও এই বিষয়ে দুই তরফেই সবিস্তারে কিছু জানানো হয়নি। অন্য দিকে, সোমবার মলদ্বীপের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, মলদ্বীপকে ১২টি ‘পরিবেশবান্ধব’ অ্যাম্বুল্যান্স উপহার দিয়েছে চিন। সব মিলিয়ে চিন-মলদ্বীপ ঘনিষ্ঠতা যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকেই।
ক্ষমতায় আসার পরেই মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর জন্য সরকারি ভাবে দিল্লিকে আর্জি জানিয়েছিল মুইজ্জু সরকার। দিন কয়েক আগে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল, তাদের নির্ধারিত দিনের মধ্যেই ভারত পদক্ষেপ করতে রাজি হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে মলদ্বীপ প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় কেন্দ্রের। দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ স্তরের বৈঠক ছিল সেটি।
দ্বিতীয় বৈঠকের পর মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ১০ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপে তিনটি বিমানক্ষেত্রের মধ্যে একটি থেকে সেনা সরাবে ভারত। বাকি দু’টি জায়গা থেকে ১০ মে-র মধ্যে ভারত সেনা সরিয়ে নেবে। বিবৃতিতে মুইজ্জু সরকার এ-ও দাবি করেছিল, এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে সহমত হয়েছে ভারত। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মলদ্বীপে বিমান চলাচল করতে পারে এমন পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারস্পরিক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত। যাতে মলদ্বীপের মানুষকে মানবিক সাহায্য এবং ওষুধপত্র সরবরাহ করতে পারে নয়াদিল্লি। সেই বৈঠক শেষে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল বলেছিলেন, ‘‘এখন যাঁরা রয়েছেন মলদ্বীপে, তাঁদের জায়গায় যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের পাঠানো হবে।’’