India-Maldives Row

‘মলদ্বীপের ঘনিষ্ঠতম সহযোগী চিন’! শি জিনপিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি বললেন মহম্মদ মুইজ্জু

সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে ‘চিনপন্থী’ নেতা মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৫
Share:

চিন সফর চলাকালীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের (বাঁ দিকে) সঙ্গে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু (ডান দিকে)। ছবি: রয়টার্স।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েনের মধ্যেই চিন সফরে গিয়েছেন তিনি। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু এ বার বেজিংকে তাঁদের ‘পুরনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী’ বললেন। বুধবার চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় মুইজ্জু আরও বলেন, ‘‘মলদ্বীপের উন্নয়নের ক্ষেত্রে চিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’’

Advertisement

পাঁচ দিনের চিন সফরের তৃতীয় দিনে বুধবার জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন মুইজ্জু। জানান করোনাপর্বের আগে চিন ছিল তাঁদের দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী। প্রসঙ্গত, সমাজমাধ্যমে ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর ঠেলা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র। আগে থেকেই মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিমান-হোটেলে টিকিট বুক করে রাখার পরেও তা বাতিল করে চলেছেন একের পর এক ভারতীয়। ক্রমে সেই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে চিন সফরে গিয়ে মঙ্গলবার মুইজ্জু চিনা সরকারের এবং সে দেশের বণিকসভার প্রতিনিধিদের কাছে পর্যটক চেয়ে ‘দরবার’ করেছিলেন।

গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা তথা ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর প্রধান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মলদ্বীপের বিরোধী নেতাদের চাপের মুখে তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।

Advertisement

এই আবহে মুইজ্জু বুধবার চিনকে ‘পুরনো এবং সবচেয়ে কাছের বন্ধু’ বলায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে স্নায়ুযুদ্ধের পারদ আরও চড়তে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্যের মোকাবিলা করতে সক্রিয় মোদী সরকার। আমেরিকার নেতৃত্বে গড়া কোয়াড-এ তারা প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তার আগে সমুদ্রপথ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে পড়ছে সাউথ ব্লক। তার অন্যতম কারণ ‘চিন ঘনিষ্ঠ’ মুইজ্জু।

ক্ষমতায় এসেই মুইজ্জু মলদ্বীপে মোতায়েন ভারতীয় সেনার ফেরত পাঠিয়েছিলেন। সম্প্রতি, তিনি নয়াদিল্লির সঙ্গে চার বছরের পুরনো জলচুক্তি বাতিলের কথা ঘোষণা করেন। ওই চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় নৌবাহিনীর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, পরিবেশ সুরক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সাহায্য করার জন্য মলদ্বীপের জলসীমায় ‘হাইড্রোগ্রাফিক’ সমীক্ষা চালানোর অনুমতি মিলত। চুক্তি বাতিলের ফলে তা বন্ধ হয়েছে। যা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এসেছে ভাটার টান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement