নিজের এবং স্বামী শিলাদিত্যের সঙ্গে বন্ধু পরাগ আগরওয়ালের (বাঁ দিকে) এই ছবি টুইট করেছেন শ্রেয়া ঘোষাল।
‘‘কর্মস্থলকে ভালবাসুন।’’ কর্মীদের লেখা প্রথম ই-মেলে টুইটারের কর্মীদের এই বার্তাই দিলেন সংস্থার নয়া সিইও ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগরওয়াল। তারই মধ্যে গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল ও পরাগের বন্ধুত্ব নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
গত কাল সিইও-র পদ থেকে সরে দাঁড়ান টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি। টুইটে পরাগের উপরে তাঁর ভরসার কথা জানান জ্যাক। মুম্বই আইআইটি-র প্রাক্তনী বছর সাঁইত্রিশের পরাগ গত চার বছর ধরে টুইটারের চিফ টেকনিক্যাল অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। আজ কর্মীদের উদ্দেশে লেখা ই-মেলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাজের উদ্দেশ্য এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কর্মী ও সংস্কৃতি দুনিয়ার সকলের চেয়ে আলাদা। আমরা সকলে মিলে যে কাজ করতে পারি তার কোনও সীমা নেই।’’ পরাগের বক্তব্য, ‘‘আমরা সম্প্রতি কয়েকটি লক্ষ্যপূরণের জন্য কৌশল স্থির করেছি। আমার বিশ্বাস সেই কৌশল সঠিক ও সাহসী। আমাদের চ্যালেঞ্জ হল সেই কৌশল মেনে কাজ করা এবং লক্ষ্যে পৌঁছন। তবেই আমরা উপভোক্তা, শেয়ারহোল্ডার ও আপনাদের প্রত্যেকের কাছে টুইটারকে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তলতে পারব।’’
‘এস অ্যান্ড পি’ সূচকের তালিকায় থাকা আমেরিকার ৫০০টি সংস্থার মধ্যে এখন সবচেয়ে কম বয়সি সিইও পরাগ। ই-মেলে তিনি জানিয়েছেন, এক দশক আগে তিনি যখন টুইটারে যোগ দেন তখন সংস্থায় ১ হাজার কর্মী ছিলেন। প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডরসির পরামর্শ ও বন্ধুত্বের জন্য তাঁর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পরাগ।
মুম্বই আইআইটি-র পরে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন পরাগ। টুইটারে যোগ দেওয়ার আগে কাজ করেছেন মাইক্রোসফ্ট, এটিঅ্যান্ডটি ও ইয়াহু-তে। ই-মেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের উপরে এখন গোটা বিশ্বের দৃষ্টি রয়েছে। আজকের এই খবর নিয়ে (পরাগের সিইও-র দায়িত্বগ্রহণ) নিয়ে নানা লোকের নানা দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। এ থেকেই বোঝা যায়, আমরা যে কাজ করি তার গুরুত্ব আছে। আসুন সকলকে দেখিয়ে দিই টুইটার কী করতে পারে।’’
জ্যাক ডরসির জমানায় রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়েছে টুইটার। কখনও আমেরিকায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কখনও বা সংঘাত হয়েছে ভারতের শাসক দল বিজেপির সঙ্গে। ধনকুবের ডরসি বিখ্যাত বন্ধুবান্ধব, শখ ও টুইটারে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারের সুবাদে নেটদুনিয়ায় অতি পরিচিত। পরাগ আবার সে ভাবে প্রচারের আলোয় কখনই আসেননি।
তবে এ দিন গায়িকা শ্রেয়া ঘোষালের সঙ্গে পরাগের বন্ধুত্বের কথা তুলে এনেছেন নেটনাগরিকদের একাংশ। বছর এগারো আগে পরাগের জন্মদিনের ঠিক আগে এক টুইটে শ্রেয়া জানিয়েছিলেন, পরাগ তাঁর ছোটবেলার বন্ধু। তাঁর বন্ধু যে খেতে আর বেড়াতে ভালবাসেন সে কথাও জানিয়ে দিয়েছিলেন গায়িকা। পরাগকে টুইটারে ‘ফলো’ করতেও অনুরোধ করেন শ্রেয়া। পরাগ টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘শ্রেয়া ঘোষাল, তোমার প্রভাব অনেক। আমি অনেক টুইটার বার্তা পাচ্ছি।’’ এ দিনও পরাগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শ্রেয়া।
অন্য দিকে জ্যাক ডরসির প্রস্থানের পরে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন কঙ্গনা রানাউত। বার বার বিতর্কিত পোস্টের জেরে কঙ্গনার অ্যাকাউন্ট স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেয় টুইটার। তখন টুইটারের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ এনেছিলেন কঙ্গনা। এ দিন ইনস্টাগ্রামে ডরসির প্রস্থান ও পরাগের দায়িত্ব নেওয়ার খবর পোস্ট করে কঙ্গনা লিখেছেন, ‘‘বাই চাচা জ্যাক।’’