ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দল। ছবি: এপি।
আরও এক বার ছুরি নিয়ে হামলা লন্ডনে। যে হামলাকে ‘জঙ্গি হামলা’ বলেছে পুলিশ। একমাত্র আততায়ী পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছে। তার ছুরির আঘাতে জখম অন্তত তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আজ দুপুর ২টো নাগাদ দক্ষিণ লন্ডন শহরতলির স্ট্রেট্যাম হাই রোডে ঘটেছে এই ঘটনা। লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশ টুইটারে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘অফিসারেরা এক জনকে গুলি করেছেন। তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগ রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।’’
হামলাকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার হাতে ছিল চাপাতি ধরনের অস্ত্র। পেশায় নার্স এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘লোকটি প্রথমে একটি দোকানে ঢোকে। সেখান থেকেই অস্ত্রটি নিয়ে সে সবাইকে কোপাতে শুরু করে। দোকানদার ছুরিটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। লোকটি তখন সাইকেলে চড়ে যাওয়া এক মহিলাকে ছুরি মারে।’’ ১৯ বছরের এক ছাত্রের বক্তব্য, ‘‘রাস্তা পেরোতে গিয়ে দেখলাম, ছুরি-নেওয়া লোকটিকে তাড়া করছেন আর এক জন। সম্ভবত তিনি সাদা পোশাকের পুলিশ। তার পরেই তিন বার গুলির শব্দ শুনি।’’
অনেকে বলেছেন, হামলাকারীকে গুলি করার আগে আশপাশের পথচলতি মানুষ ও দোকানদারদের চিৎকার করে সরে যেতে বলেন অফিসারেরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়। গুলির শব্দের কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্যারামেডিক-সহ আপৎকালীন উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আসে আরও কিছু সশস্ত্র পুলিশ। ঘটনাস্থলের উপরে চক্কর দিতে থাকে পুলিশের হেলিকপ্টার। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সমাজমাধ্যমে ওই এলাকার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যা দেখে জনতাকে ওই এলাকার ছবি শেয়ার করার বিষয়ে সংযত হতে বলে পুলিশ।
গত নভেম্বরেই ছুরি নিয়ে হামলা হয়েছিল লন্ডন ব্রিজে। ছুরি নিয়ে দু’জনকে খুন করার পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল জঙ্গি উসমান খান। পুলিশ সূত্রের খবর, উসমানের মতোই নকল আত্মঘাতী জ্যাকেট পরেছিল আজকের হামলাকারী। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ, ইসলামি চরমপন্থী চিন্তাধারা থেকেই এ দিনের ঘটনা ঘটিয়েছে সে। তবে সে কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি না, স্পষ্ট নয়। ফলে অনেকের মতে, সে একা হামলা-চালানো ‘লোন উল্ফ’-ও হতে পারে।
আপৎকালীন পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ দিয়ে আহতদের সমবেদনা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, ‘‘জঙ্গিরা ভেদরেখা টেনে আমাদের জীবনযাত্রাকে ধ্বংস করতে চায়। আমরা লন্ডনে সেটা হতে দেব না।’’